দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বাংলা গানের অন্যতম কালজয়ী শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী। ভরাট কণ্ঠ দিয়ে তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন দেশের আনাচে-কানাচে। তার কণ্ঠে ‘আছেন আমার মোক্তার, আছেন আমার ব্যারিস্টার’ কিংবা ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো’ গানগুলো শোনেনি, এমন শ্রোতা খুঁজে পাওয়া যাবে না।

জীবন্ত কিংবদন্তি শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদীর জন্মদিন আজ। ১৯৪০ সালের ১ জুলাই তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার শৈশব কৈশোর কেটেছে আগরতলা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কলকাতায়।

আব্দুল হাদীর পিতা সৈয়দ আব্দুল হাই ছিলেন তৎকালীন সরকারি কর্মকর্তা। তিনি গান গাইতে এবং শুনতে পছন্দ করতেন। বাবার গ্রামোফোনে গান শুনেই সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ জন্মায় আব্দু হাদীর। নিজে নিজে গুনগুন করে গাইতেন। আর এভাবেই তার সঙ্গীতের চর্চা শুরু।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলায় স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর সৈয়দ আব্দুল হাদী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রযোজক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। সর্বশেষে তিনি লন্ডনে ওয়েল্স ইউনিভার্সিটিতে প্রিন্সিপাল লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কাজ করেছেন।

ছাত্রজীবন থেকেই সিনেমায় গান গাওয়া শুরু করেন আব্দুল হাদী। সেই হিসেবে তার সঙ্গীত জীবন পঞ্চাশ বছরের বেশি। একক সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে তিনি প্রথম সিনেমায় গান করেন ১৯৬৪ সালের ‘ডাকবাবু’ সিনেমায়। এরপর থেকে নিয়মিত গান করে গেছেন রূপালি দুনিয়ায়। আর নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।

সৈয়দ আব্দুল হাদীর গাওয়া কালজয়ী গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘যেও না সাথী’, ‘চক্ষের নজর এমনি কইরা একদিন খইয়া যাবে’, ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো’, ‘চলে যায় যদি কেউ বাঁধন ছিঁড়ে’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’, ‘এমনও তো প্রেম হয়’, ‘চোখ বুঝিলে দুনিয়া আন্ধার’, ‘যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে’ ইত্যাদি।

সৈয়দ আব্দুল হাদী বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে পাঁচবার শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। এছাড়া ২০০০ সালে তিনি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত হন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০১ জুলাই, ২০২০)