দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে এবারও বিপাকে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। বলতে গেলে পানির দরেই বিক্রি হয়েছে পশুর চামড়া। প্রকারভেদে প্রতিটি গরুর চামড়া ১০০ থেকে ৪০০ টাকা ও ছাগলের চামড়া ১০ টাকায় কেনা হয়েছে। তবে বড় গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

চামড়ার বাজারে ধস নামায় বঞ্চিত হয়েছেন দুস্থরা। ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন আলেম সমাজ। আড়তগুলোতে চামড়ার দাম একেবারেই কম এতে চামড়া কিনেও বিপাকে পড়েছেন মৌসুমী এসব ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর জিগাতলা ট্যানারি মোড় ও পোস্তার আড়তে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক কমে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি হতে দেখা গেছে। একজন ক্রেতা জানান, বড় গরুর চামড়া ৫০০-৬০০ ও মাঝারি গরুর চামড়া ৩০০-৩৫০ টাকায় কিনেছেন। আর ৪টি ছাগলের চামড়া কিনেছেন ১০ টাকায়।

চট্টগ্রামে আজ সকালেও রাস্তার ধারে অবিক্রিত চামড়া পড়ে থাকতে দেখা গেছে। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব চামড়া নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো এখনো বিক্রি হয়নি। এবার ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার, যা গত বছর ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকার মধ্যে ছিল। ছাগলের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় প্রতি বর্গফুট ১৩ টাকা। কিন্তু বাস্তবে চামড়ার দাম ছিল আরো অনেক কম।

বগুড়ায় শনিবার বড় বড় ব্যবসায়ীরা দোকান বা রাস্তার পাশে বসে দিনভর চামড়া কিনেছেন। মূল্য কম হওয়ায় অনেক কোরবানিদাতা চামড়া বিক্রি না করে মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দান করেছেন।

বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর, বাদুড়তলা, ১নং রেলগেট এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বেলা ১১টার পর থেকে চামড়া কেনাবেচা শুরু হয়। গরুর চামড়া ১০০ টাকা (গাভী) থেকে ৪০০ টাকায় (ষাঁড়) বিক্রি হয়। তবে বড় সাইজের গরুর চামড়া (২৫-৩০ বর্গফুট) ৫০০ থেকে ৫৫০টাকায় কেনা হয়েছে। ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে, ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকায়। ভেড়ার চামড়ার দাম দেয়া হয়নি। বিক্রেতারা গরু বা ছাগলের চামড়ার সঙ্গে ফ্রি দিয়ে গেছেন।

সৈয়দপুরের এক চামড়া ব্যবসায়ী জানান, এখানকার অনেক ব্যবসায়ীর টাকা ট্যানারি মালিকরা আটকে রেখেছেন। ফলে পুঁজির অভাবে তারা চামড়া কিনতে পারেননি। তবে কিছু কিছু খুচরা ব্যবসায়ীর মাধ্যমে স্বল্প দামে চামড়া সংগ্রহ করেছেন লাভের আশায় কিন্তু তাও বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছে।

ময়মনসিংহে কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। সরকারের দেয়া দামের চেয়েও কমে চামড়া কেনার পরও বিক্রি করতে পাড়ছেন না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, কোরবানি শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে চামড়া সংগ্রহ করছেন তারা। তবে, বিক্রি করতে গেলে তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো টাকায় কেনা চামড়া আড়তে দাম বলা হচ্ছে দুইশো থেকে আড়াইশো টাকা। দাম না পেয়ে এরই মধ্যে পুঁজি হারানোর আশঙ্কায় পড়েছেন এসব ব্যবসায়ীরা।

নীলফামারীতে কোরবানির গরুর চামড়া ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা ও ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।

করোনার প্রভাবে দেশের বাইরে রপ্তানি বন্ধ থাকায় গরুর চামড়া কিনতে অনীহা পাইকার ব্যবসায়ীদের। ফলে এসব কোরবানির গরুর চামড়া বিক্রি করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৩আগস্ট, ২০২০)