দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক, যশোর:বাংলাদেশের যশোরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের (বালক) ভেতরে তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেছেন, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালকসহ নয় কর্মকর্তাকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন তারা।
বিবিসি বাংলাকে তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রটির ভেতরে থাকা - খাওয়াসহ অভ্যন্তরীণ আরও নানা বিষয়ে অব্যবস্থাপনা নিয়ে কর্তৃপক্ষের ওপর আগে থেকেই অসন্তুষ্টি ছিল এই কিশোরদের।
তার জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।

এছাড়া এই উন্নয়ন কেন্দ্রের ভেতরে কর্তৃপক্ষের দুটি গ্রুপে থাকা কিশোরদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হতে পারে বলেও তারা জানতে পেরেছেন।
ঠিক কী কারণে ঘটনা ঘটেছিল - সে বিষয়ে এখনও তদন্ত চলছে বলে জানান মি. হোসেন।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "এটা একটা কারাগার। এখানে কোন হত্যা মানে কাস্টডিয়াল ডেথ (হেফাজতে মৃত্যু)।"
"সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের কোথায় গাফিলতি ছিল, এটা কীভাবে ঘটলো, কারা প্রহার করলো, কারা যুক্ত ছিল, এই বিষয়গুলো নিশ্চিত হতে আমরা সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছি। সেখানে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নেব।"
এদিকে নিহত কিশোরদের পরিবার আজকে যশোরের এই উন্নয়ন কেন্দ্রে আসবেন এবং তারা মামলা দায়ের করলে পুরোদমে তদন্ত শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার পুলেরহাট এলাকায় ওই শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের অভ্যন্তরে সংঘর্ষের অন্তত ১৪ জন আহত হয়।
কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ হতাহতদের সন্ধ্যা ৭টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে কিশোরদের মৃত্যুর ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
এর আগে দুর্ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে কিছু জানায়নি কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তারা।
আহত কিশোরদের অভিযোগ, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মকর্তা তাদের বেধড়ক পেটানোর কারণে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কোন কর্মকর্তা পুলিশের কাছে তাদের কোন বক্তব্য জানায়নি বলে জানিয়েছেন মি. হোসেন।
তিনি বলেন, "হাউজ সিনিয়রদের মধ্যে গ্রুপিং থাকতে পারে বলেও আমরা সন্দেহ করছি। সেখান থেকেই হয়তো সংঘর্ষ হয়েছে। এ বিষয়ে উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের বক্তব্য জানতে আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি।"
২৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ওই শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ২৭৭ জন কিশোরকে সংশোধনের জন্য রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
তাদের অধিকাংশ গুরুতর অপরাধের আসামী বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত তিন কিশোরের মধ্যে ২ জন হত্যা মামলার এবং একজন ধর্ষণ মামলার আসামী বলে তারা নিশ্চিত করেছেন। (দ্য রিপোর্ট / টিআইএম/১৪-০৮-১২)