রংপুর প্রতিনিধি: কারো ঘর পোড়া যায় কেউ আলু পোড়া খায়, গ্রাম্য এই বচনটি কষ্টের। ঠিক এমনটি হয়েছে রোববার উত্তরের বিভাগীয় নগরী রংপুরে। ১৬ ঘণ্টার অবিরাম বৃষ্টিতে নগরী তলিয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় এমনটা হয়েছে বলে মনে করেন নগরবাসী।

এদিকে বাসা বাড়িতে পানি উঠলেও ক্ষুব্ধ মানুষজন সড়কে মাছ ধরতে ভুলে যাননি।

রংপুর নগরীর বিভিন্ন পাড়ায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করেছেন ইট পাথরের দালানে থাকা মানুষজন। এ যেনো মাছ ধরার উৎসব!

নগরীর কামালকাছনা গুঞ্জনমোড় এলাকার বাসিন্দা আজহার আলী চৌধুরী জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি রাস্তায় কোমর পানি। মাস ভেসে বেড়াচ্ছে। সেই ছোট বেলায় মাছ ধরেছি আর আজ ধরলাম, ভালোই লাগছে।

তবে তার প্রতিবেশী মনির হোসেন বলেন, নগরীতে আমরা মাছ ধরতে চাই না। এটা নগরবাসীর জন্য অপমান। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

গুপ্তপাড়ার বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার আসাদুজ্জামান বলেন, এক সময় গল্প শুনতাম বাবার কাছে যে, বাড়ির উঠোনেই মাছ ধরতো। আজ সেই বাবার কথাই মনে পড়ে গেলো। বাসায় পানি উঠলেও মাছ ধরতে বেশ আনন্দ লাগছে।

রংপুর মৎস্য অফিসের সহকারী পরিচালক সিনথিয়া জানান, অতিবৃষ্টির কারণে বিভিন্ন পুকুর জলাশয়ে তলিয়ে যাবার কারণে মাছ ভেসে গেছে। সে কারণেই সড়কে মাছ দেখতে পাচ্ছে নগরবাসী।

এদিকে আজ রংপুরে রেকর্ড ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার ফলে নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে এবং ৫৬টি এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার রাত ১০টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৮ ঘণ্টায় ২৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়া বিদ মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে বৃষ্টি এভাবে চললে নগরীর বেশির ভাগ এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বৃষ্টিতে শ্যামা সুন্দরী খাল তলিয়ে যাওয়ায় বাড়ি ঘরে পানি ঢুকেছে। এলাকাবাসী জানিয়েছে, ৮৮ সালের বন্যার পর এমন অবস্থা তারা দেখেনি।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৮সেপ্টেম্বর, ২০২০)