দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: দ্বিতীয়বারের মত নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হলেন জাসিন্ডা আর্ডার্ন। শনিবার দেশটির স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই ভোটগ্রহণ চলে।

ভোট গ্রহণ শেষে ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, দুই তৃতীয়াংশ ভোট গণনা হয়েছে। যার মধ্যে ৪৯ দশমিক দুই শতাংশ ভোট পেয়েছে আর্ডার্নের লেবার পার্টি। অর্থাৎ দেশটির পার্লামেন্টের ১২০ আসনের মধ্যে ৬৪টিতে তার দল জয়ী হওয়ার আভাস দিচ্ছে। ফলে বিগত কয়েক দশকের মধ্যে প্রথম বারের মতো দেশটিতে একক দলের সরকার গঠন হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় আর্ডেনের ভূমিকাকে ভোটাররা পুরস্কৃত করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

৫০ ভাগের চেয়ে বেশি ভোট পেয়ে লেবার পার্টি প্রতিদ্বন্দ্বী জুডিথ কলিন্সের ন্যাশনাল পার্টির চেয়ে এগিয়ে আছে। ন্যাশনাল পার্টি পেয়েছে ২৬ দশমিক ২ ভাগ ভোট। এ পর্যন্ত ৪০ শতাংশ ভোট গণনা করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের মহামারি মোকাবেলায় আর্ডেনের সরকারের দক্ষতাই তাকে ভোটের বাক্সে এই সাফল্য জুগিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

লেবার এমপি ও অর্থমন্ত্রী গ্র্যান্ট রবার্টসন বলেন, এভাবে যদি ভোট পড়ে তাকে, তাহলে এটা হবে বিশাল এক ম্যান্ডেট। আমাদের করোনা মোকাবেলায় জনগণ খুশি হয়েছে। তাই তারা দেশ পরিচালনায় আমাদেরই যোগ্য মনে করেছে। আমরা মহামারির প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পেরেছি।

ফলাফলে দেখা গেছে ১৯৯৬ সালে নিউ জিল্যান্ডে আনুপাতিক ভোট ব্যবস্থা চালুর পর থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আসন পাওয়া দলে পরিণত হয়েছে ৪০ বছর বয়সী জাসিন্ডার লেবার পার্টি। ফলে এবারই প্রথমবারের মতো একক দলের সরকার গঠন করতে পারবেন তিনি।

বিশ্লেষকরা দাবি করছেন, মহামারী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় তার দারুণ সফলতার জন্যই জনগণ ফের তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিছে নিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে তার সংস্কার এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ পেয়ে গেলেন তিনি।

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে বিলম্বিত হয় এবারের নিউ জিল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচন। মোট ১৭ জন প্রার্থীর অংশগ্রহণ থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় আসলে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির নেতা জাসিন্ডা ও ন্যাশনাল পার্টি প্রধান জুডিথ কলিন্সের মধ্যে।

রাজনৈতিক ওয়েবসাইট ডেমোক্রেটিক প্রজেক্টের রাজনৈতিক বিশ্লেষক জিওফ্রে মিলোর বলেন, এটাকে দলের চেয়ে ব্যক্তির বিজয়ই বলা উচিত। জেসিন্ডা আর্ডেনের ব্যক্তিগত ইমেজই তাকে সাফল্যের চূড়ায় তুলে দিয়েছে।

প্রথম মেয়াদে জাসিন্ডা আর্ডেনকে জাতীয়তাবাদী একটি দলের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে হয়। সেকারণে এই মেয়াদে তার প্রতিশ্রুত বেশ কয়েকটি প্রগতিশীল পরিবর্তন আনতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় তাকে। তবে এবারের নির্বাচনে একক দলের সরকার গঠনের মতো সমর্থন পাওয়ায় তা অতিক্রম করতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর অকল্যান্ডের নিজ বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন জাসিন্ডা আর্ডেন। সমবেত সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়ানোর পাশাপাশি অনেককে জড়িয়ে ধরেন তিনি।

উল্লেখ্য, জাসিন্ডার বর্তমান জোট সহযোগী জাতীয়তাবাদী ফার্স্ট পার্টি পেয়েছে ২.৬ শতাংশ এবং গ্রিন পার্টি ৭.৬ শতাংশ ভোট। কোনও কারণে জাসিন্ডা যদি কেবল লেবার পার্টির সরকার গঠনে ব্যর্থ হন তাহলে আশা করা হচ্ছে তিনি গ্রিন পার্টির ওপর ভরসা করবেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৭ অক্টোবর, ২০২০)