দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: একই দিনে আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সম্মেলনের ১১ মাস পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি পেল স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ এবং মৎস্যজীবী লীগ। এছাড়া এক বছর আগে সম্মেলন হওয়া মহিলা শ্রমিক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিও ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এটি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন নয়। অলিখিতভাবে ক্ষমতাসীন দলের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চূড়ান্ত অনুমোদনের পর সোমবার দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষরে পৃথক পত্রের মাধ্যমে এই চারটি সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি অনুমোদনের চিঠিতে ওবায়দুল কাদের আশা প্রকাশ করে বলেন, নবনির্বাচিত সব সদস্যরা নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা, আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে স্ব স্ব দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হবেন। সবাই ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় সংগঠনগুলোকে আরও সুদৃঢ়, সুসংগঠিত ও শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে পরিণত করবেন।

গত বছরের ৬ নভেম্বর কৃষক লীগ ও ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের সদ্য সহযোগী সংগঠনের মর্যাদা পাওয়া মৎস্যজীবী লীগের জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল একই বছরের ২৯ নভেম্বর। এর আগে ওই বছরের ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় মহিলা শ্রমিক লীগের জাতীয় সম্মেলন।

সম্মেলন অনুষ্ঠানের দিনই এই চার সংগঠনের নতুন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কার্যকরী সভাপতির নাম ঘোষণা করে সাতদিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন সময় এসব সংগঠন প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দিলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এতদিন যাচাই-বাছাই ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কাজ থেমে ছিল।

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে গঠিত কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে এসব সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত রোববার জাতীয় শ্রমিক লীগের কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে সহযোগী-ভাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ শুরু হয়। সোমবার আরও চার সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হলো। মঙ্গল-বুধবারের মধ্যে গত বছরের নভেম্বরে সম্মেলন হওয়া যুবলীগ এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কথা রয়েছে। মাহবুবুর রহমান হেলাল, পানিসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক: রাহুল বড়ুয়া এবং প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক: সাখাওয়াত হোসেন কবির।

এছাড়া ২৬ জন উপ-সম্পাদক এবং ৫০ জন কার্যনির্বাহী সদস্য রয়েছেন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে রয়েছেন সৈয়দ নুরুল ইসলাম, গোলাম সারওয়ার মামুন, অ্যাডভোকেট তাপস পাল, নজরুল ইসলাম মহসিন, এনাম-ই-খোদা জুলু, আবু তাহের, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, আশীষ কুমার মজুমদার, নুরুজ্জামান ও টুলু বিশ্বাস।

কৃষক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি
গত বছরের ১৬ নভেম্বর কৃষক লীগের সম্মেলনের দিন কৃষিবিদ সমীর চন্দকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতিকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সোমবার সংগঠনটির ১১১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ২১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদও অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদিত এই কমিটির চিঠি কৃষিবিদ সমীর চন্দ্র ও উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপির হাতে হস্তান্তর করেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।

পূর্ণাঙ্গ কমিটির অন্য নেতারা হচ্ছেন সহ-সভাপতি: শরীফ আশরাফ আলী, মাহবুব-উল-আলম শান্তি, শেখ জাহাঙ্গীর আলম, আশা লতা বৈদ্য, এস এম আকবর আলী চৌধুরী, সংসদ সদস্য হোসনে আরা, মিয়া আবদুল ওয়াদুদ, আবদুল লতিফ তারিন, মোস্তাফা কামাল চৌধুরী, কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম, ডি এম জয়নুল আবেদীন, এম এ মালেক, আবুল হোসেন, কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন সুইট, রেজাউল করিম হিরন ও মাকসুদুর ইসলাম; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক: কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু, শামীমা শাহরিয়ার ও এ কে এম আজম খান; সাংগঠনিক সম্পাদক: জসীম উদ্দিন (গাজী জসিম), আসাদুজ্জামান বিপ্লব, হাবিবুর রহমান মোল্লা, সৈয়দ সাগিরুজ্জামান শাকীক, হিজমুল বাহার রানা, নুরে আলম সিদ্দিকী হক ও নাজমুল হক পানু; অর্থ সম্পাদক: নাজির মিয়া; আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক: জিয়াউর হক নাছির; আইন বিষয়ক সম্পাদক: জহির উদ্দিন লিমন; প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক: শেখ ফারুক আহমেদ; দপ্তর সম্পাদক: রেজাউল করিম রেজা।

তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক: শামীমা সুলতানা; সমবায় বিষয়ক সম্পাদক: আহসান হাবীব; কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক: শাহিনুর রহমান; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক: মজিবুর রহমান মিয়াজী; মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সম্পাদক: শামছুদ্দিন আল আজাদ; কৃষি ও পণ্য বিষয় সম্পাদক: আজমল হোসেন; কৃষি ঋণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক: তারিক আনাম; পানি, সেচ ও বিদ্যুৎ বিষয়ক সম্পাদক: আবদুর রাশেদ খান; ভূমি বিষয়ক সম্পাদক: এফতেখার হোসেন দুলু; বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম।

কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক: আশরাফুল ইসলাম স্বপন; স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক: উম্মে হাবিবা; ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক: আমিরুল ইসলাম (খোকা পাটোয়ারী); সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক: হালিমা রহমান; ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক: মোশারেফ হোসেন আলমগীর; বেসরকারি সংস্থা বিষয়ক সম্পাদক: মিরুল ইসলাম; মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক: আলফাজ উদ্দিন এবং ক্ষেতমজুর বিষয়ক সম্পাদক: ইসহাক আলী সরকার।

২১ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, গুলশান আরা বেগম, কৃষিবিদ ড. মির্জা জলিল, ফরিদুন্নাহার লাইলী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা, সিদ্দিক হোসেন চৌধুরী, মোতাহার হোসেন মোল্লা, ছবি বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট খন্দকার শামসুল হক রেজা, আলম আহমেদ, ওমর ফারুক, অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ আশরাফুল হক (জর্জ), মাহতাব উদ্দিন সরকার, কাজী এ টি এম আনিসুর রহমান বুলবুল, জাভেদ মোশারফ রুপক, অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ, কাজী সিরাজুল ইসলাম, ডা. মনোয়ারা বেগম, নুরুল ইসলাম, এবাদুল করিম বুলবুল ও সাদিকুর রহমান।

মৎস্যজীবী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি
গত ২৯ নভেম্বর মৎস্যজীবী লীগের প্রথম জাতীয় সম্মেলনের দিন সায়ীদুর রহমানকে সভাপতি, সাইফুল আলম মানিককে কার্যকরী সভাপতি এবং শেখ আজগর নস্করকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্যের কমিটি ঘোষণঅ করা হয়েছিল। পরে ২০ ও ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে সংশোধিত গঠনতন্ত্রে সংগঠনটিকে দলের সহযোগী সংগঠনের মর্যাদা দেওয়া হয়।

সোমবার ঘোষিত ১১১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আরও রয়েছেন সহ-সভাপতি: আবুল বাশার, আবদুল গফুর চৌকিদার, মুহাম্মদ আলম, গিয়াস উদ্দিন খান, শাহ আলম, আনোয়ারুল ইসলাম, মোহাম্মদ ইউনুছ, এস এম নাছির উদ্দিন মানিক, মঞ্জুর কাদের মোহন, অধ্যাপক মমতাজ খানম, আতিকুর রহমান খান নান্নু, এহসাননুল হক চৌধুরী মিলন, নাসরিন আকতার ও আবদুল বাতেন অশ্রু; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক: আবদুল আলীম, রফিকুল ইসলাম খা ও ফিরোজ আম্মেদ তালুকদার; অর্থ বিষয়ক সম্পাদক: নাছির উল্লাহ নাছির, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক: কাজী শফিউল আলম শফিক।

দপ্তর সম্পাদক: এম এইচ এনামুল হক রাজু, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক: অধ্যাপক আবদুল মতিন সরকার, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক: সাঈদ মজুমদার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক: তাইফুর রহমান, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক: আবদুল কাইয়ুম তালুকদার, প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক: ড. শংকর তালুকদার, যুব ও ক্রড়া বিষয়ক সম্পাদক: সুকুমার বর্মণ সৌরভ এবং জনশক্তি ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক: শফিকুল হায়দার ভূইয়া। এছাড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ১০ জন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, ৩ জন উপ-সম্পাদক, ২০ জন সহ-সম্পাদক ও ৩৫ জন কার্যনির্বাহী সদস্য রয়েছেন।

মহিলা শ্রমিক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যারা আছেন
গত বছরের ১২ অক্টোবর সম্মেলনের দিন সুরাইয়া আক্তারকে সভাপতি, শামসুন নাহার এমপিকে কার্যকরী সভাপতি ও কাজী রহিমা আক্তার সাথীকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা হয়েছিল। সোমবার ঘোষিত ৩৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটিতে আরও রয়েছেন সহ-সভাপতি: সুলতানা আনোয়ারা, সৈয়দা খালেদা বেগম, খালেদা আফরোজ বিউটি, আফরোজা ফাতেমা, হেলেনা পারভিন, রোজিনা পারভিন, অ্যাডভোকেট নাজমা বেগম, মেহেরুন্নেসা বিউটি, পুষ্প আক্তার মায়া ও নাসরিন আক্তার; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক: সৈয়দা খায়রুন নাহার তামরিন, জিনাত রেহানা নাসরিন ও সৈয়দা রোকেয়া আফরোজা শিখা; সাংগঠনিক সম্পাদক: সেলিনা আক্তার, শাহনাজ বেগম শেফালী ও সৈয়দা নাসিমা আক্তার।

প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক: আজরা জেবিন, দপ্তর সম্পাদক: নূরন নাহার বেগম, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক: সাগোরা খাতুন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক: রোকসানা পারভিন রুবা, শিক্ষা, সাহিত্য ও গবেষণা সম্পাদক: ফাতেমা তুজ জোহরা, আইন ও দর কষাকষি বিষয়ক সম্পাদক: প্রমিলা পোদ্দার, শ্রমিক কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক: সাবিনা সুলতানা, ট্রেড ইউনিয়ন সমন্বয় বিষয়ক সম্পাদক: সোহেলী আফরোজ, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক: লুবনা নাজনিন সুলতানা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক: সাবিনা নূর, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক: তাসলিমা আকন্দ (সীমা) এবং কার্যকরী সদস্য: রুমা বেগম, মাকসুদা বেগম, ইসমত আরা খানম লিপি, সামসুন্নাহার ও নাসরিন চৌধুরী।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২০ অক্টোবর, ২০২০)