দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার গোলাম কিবরিয়াসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১৯ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির আদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাদের বদলি করা হয়।

এদিকে, এস‌পি‌বিএন’র উপ-পু‌লিশ মহাপ‌রিদর্শক ‌নিশারুল আ‌রিফকে সিলেট মে‌ট্রোপ‌লিটন পু‌লিশ ক‌মিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

এর আগে সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান উদ্দিন (৩০) নামে যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-তে স্থানান্তর করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়েছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মামলাটির তদন্তের দায়ভার আজই বুঝে নেবে পিবিআই।

রোববার (১১ অক্টোবর) ভোরে রায়হান উদ্দিন (৩০) নিহত হন। পুলিশের দাবি, ছিনতাইয়ের দায়ে নগরীর কাস্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে তিনি নিহত হন। অপরদিকে, রায়হানের পরিবারের অভিযোগ, কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে নিহত হন রায়হান।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে এজাহারে কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি। অবশ্য মামলা দায়েরের পর থেকে পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া। ঘটনার পর থেকে তিনি কর্মস্থল কোতোয়ালির বন্দরবাজার ফাঁড়িতে অনুপস্থিত রয়েছেন। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গ্রেফতার এড়াতে এসআই আকবর পলাতক রয়েছেন।

এ বিষয়ে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জ্যোতির্ময় সরকার জানান, এসআই আকবরসহ চার পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযোগ করা হয়েছে। পলাতকের বিষয়টি তিনি জানেন না।

মামলায় নিহতের স্ত্রী উল্লেখ করেন, ডাক্তারের চেম্বারের কম্পাউন্ডার হিসেবে কর্মরত তার স্বামী কাজে বের হয়ে যাওয়ার পর রাত ১০টা থেকে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। রাত ৪টা ৩৩ মিনিটে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে রায়হান তার মাকে কল করে কথা বলেন।

ওই বলে রায়হান কাঁদতে কাঁদতে জানান যে, তাকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রেখেছে এবং টাকা না দিলে ছাড়বে না। এরপরই ভোর সাড়ে ৫টায় চার হাজার টাকা নিয়ে রায়হানের চাচা হাবিব উল্লাহ ফাঁড়িতে গেলে কর্তব্যরত ব্যক্তিরা তাকে ১০টার সময় ১০ হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলেন।

তিনি ১০টায় টাকা নিয়ে গেলে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলা হয় এবং সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন যে, ৭টা ৪০ মিনিটে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে এবং ছিনতাই করতে গিয়ে গণপিটুনিতে তার মৃত্যু হয়েছে।

মামলায় রায়হানের স্ত্রী উল্লেখ করেন, বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনেই মৃত্যু হয়েছে রায়হানের।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২২ অক্টোবর, ২০২০)