মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও কারিগরি জটিলতা না দেখা দিলে আজ (শনিবার) পদ্মা সেতুতে বসানো হতে পারে ৩৪তম স্প্যান ‘টু-এ’। শনিবার বসানো সম্ভব না হলে আগামীকাল স্প্যানটি বসানো হবে।

মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ৭ ও ৮ নম্বর পিয়ারের ওপর বসানো হবে স্প্যানটি। এর ফলে দৃশ্যমান হবে প্রমত্তা পদ্মার বুকে নির্মিত হওয়া সেতুর ৫ হাজার ১শ মিটার অর্থাৎ ৫.১ কিলোমিটার অংশ। ৩৪তম স্প্যানটি মডিউল নং ২ এর ১নং স্প্যান।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, আজ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ক্রেনের মাধ্যমে স্প্যানটি নির্ধারিত পিয়ারে কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। সব ঠিক থাকলে বিকালে স্প্যানটি পিয়ারের উপর বসিয়ে দেওয়া হবে। তবে কোনো জটিলতা তৈরি হলে আগামীকাল (রবিবার) স্প্যানটি বসানো হবে।

সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে, মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ধূসর রঙের ৩৪তম স্প্যানটি ভাসমান ক্রেনে তোলার কাজ চলছে। স্প্যানটি তোলা হয়ে গেলে নির্ধারিত পিয়ারের অভিমুখে রওনা হবে ক্রেনটি।

পদ্মা সেতু সূত্রে আরও জানা গেছে, ৩৪তম স্প্যানটি বসানোর পর ৩০ অক্টোবর ২ এবং ৩ নম্বর পিয়ারের ওপর ৩৫তম স্প্যান, নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ ৩৬তম স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আর আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সকল স্প্যান বাসানোর নির্দেশনা রয়েছে সেতু সচিবের। এর আগে গত ১৯ অক্টোবর সেতুতে বসানো হয়েছিল ৩৩তম স্প্যান।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৩টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৪ হাজার ৯শ ৫০মিটার অংশ।

৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৪ অক্টোবর, ২০২০)