দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : হরতালে নিহত, আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের দায়ভার গ্রহণ করে হরতাল আহবানকারী সংগঠন ও ব্যক্তিকে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান করে সংসদের চলমান অধিবেশনেই হরতালবিরোধী আইন পাশের দাবি জানিয়েছেন মহাজোট সংসদ সদস্যরা। একই সঙ্গে হরতাল আহবানকারী দলের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তারা।

জাতীয় সংসদে রবিবার পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা এ দাবি জানান। এ সময় তারা নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের টানা ৮৪ ঘন্টার হরতালের কঠোর সমালোচনা করেন।

তারা বলেন, বিরোধীদলের নেতার রক্তপিপাসা বেড়েই চলেছে। হরতালের নামে কতোজন মানুষ মারা যাচ্ছে, কতোজন পুড়ে মরছে, তা নিয়ে খালেদা জিয়া চিন্তিত নন।

মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, হরতালে কেউ নিহত হলে, আহত হলে, গাড়ি পোড়ানো হলে বা অন্য কোনও সম্পদ বিনষ্ট হলে কেউ এর দায়ভার নেয় না। ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও কোনও বিধান নেই। কিন্তু আমি মনে করি, হরতালে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যারা হরতাল ডাকবেন, সেই দলের অভিযুক্ত পিকেটারদের কাছ থেকে ওই ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। আর যদি ওই অভিযুক্তদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা না যায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট দলের প্রধানের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। যদি দলীয়প্রধান দেউলিয়া হন, তাহলে তার সম্পত্তি জব্দ করে হরতালে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

মুজিবুল হক এ সময় আবারও তার হরতালবিরোধী বেসরকারি বিলটি পাসের দাবি জানিয়ে বলেন, আমি হরতাল বন্ধ করার জন্য নয়, বরং হরতাল নিয়ন্ত্রণ করা এবং গণমুখী করার জন্য ওই বিলটি এনেছিলাম। কিন্তু বহুদিন ধরেই এটি পড়ে আছে। বিলটি পাস করার সময় এসেছে।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, হরতাল প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি।

তিনি আরো বলেন, আইন করার আগ পর্যন্ত বর্তমান আইনেই হরতালের নামে নাশকতা সৃষ্টিকারীদের কঠোর হাতে দমনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন। হরতাল আহবানকারী বিরোধীদলের নেতা খালেদা জিয়াসহ দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দিন খান বাদল বলেন, বিরোধীদলের নেতার রক্তপিপাসা এতই বেড়ে চলেছে যে, হরতালে কতজন মানুষ মারা গেল, তা নিয়ে তিনি মোটেই চিন্তিত নন।

তিনি আরো বলেন, সবচেয়ে বড় আইন জনগণের মস্তিষ্কে প্রণীত হয়। দেশে যেভাবে একনাগাড়ে হরতাল দেওয়া হচ্ছে, তাতে এর অসারতা প্রতিদিনই প্রমাণিত হচ্ছে। হরতালের নামে যারা বোমা মারছে, সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন জনগণই তাদের চামড়া তুলে ফেলবে।

(দিরিপোর্ট২৪/আরএইচ/আরএইচ/এমএআর/নভেম্বর ১০, ২০১৩)