দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: করোনা টিকা নেওয়ার প্রথম ডোজের সময় ৬ এপ্রিল শেষ হবে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (পিজি) উপ-পরিচালক ডা. খুরশীদ আলম।

তিনি জানান, দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে ৭ এপ্রিল থেকে। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টিকা দেওয়া যাবে। নাম নিবন্ধনের পর তারিখ অনুযায়ী কোনো কারণে কেউ টিকা নিতে না পারলেও সমস্যা নেই। দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্ধারিত সেন্টারে গেলে টিকা দেওয়া যাবে।

সরকার আগামী ছয় মাসে তিন কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বলেও জানান খুরশীদ আলম। একই সঙ্গে প্রতি মাসে গড়ে ২৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে।

করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছিল ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে। প্রথম দফা টিকাদান কর্মসূচিতে স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখসারির মানুষ এবং ৫৫ বছরের বেশি বয়সীরা টিকা নিতে পারবেন বলে প্রথমে জানানো হয়। তবে পরে ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের সবাইকে এই টিকা দেওয়ার আওতায় আনা হয়। ৪০ বছর বয়সীদের সবাই স্থানীয় যেকোনো সরকারি হাসপাতালে গিয়ে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে পারবেন।

গত ২৭ জানুয়ারি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই দিন বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম টিকা নেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। এছাড়াও প্রথম দিনে মোট টিকা নিয়েছেন ২৭ জন। এরপর ২৮ জানুয়ারি টিকা নিয়েছেন ৩১ হাজার ১৬০ জন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৪ মার্চ ২০২১।

টিকা নিতে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে ‘সুরক্ষা’ ওয়েব সাইটে www.surokkha.gov.bd লগইন করে নিবন্ধন করতে হয়। তবে যার জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তিনি নিবন্ধন করতে পারবেন না এবং আপাতত করোনার টিকাও পাবেন না। অ্যাপ ব্যবহার করে নিবন্ধন শেষ হলে একটি কার্ড ইস্যু হবে নিবন্ধনকারীর নামে। এই কার্ড টিকা গ্রহণের দিন সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রে যেতে হবে। টিকা নেওয়ার তারিখ এবং সময় মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়।

কোনো রকম ঝামেলা বা হয়রানি ছাড়াই দেশ জুড়ে মানুষ সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের টিকা নিচ্ছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস), তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং এটুআই কর্মসূচি যৌথভাবে এই অ্যাপ তৈরি করেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান জানান, এই অ্যাপের মাধ্যমে ৭ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ৫০ লাখ ১৭ হাজার ৮০৪ জন। ইতোমধ্যে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ৩৭ লাখ ৮৯ হাজার ৩৫২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২৪ লাখ ২০ হাজার ৮৫৩ জন এবং নারী ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৯ জন।

২১ জানুয়ারি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে ভারত। এছাড়া ২৫ জানুয়ারি দেশে পৌঁছে ভারত থেকে কেনা ৫০ লাখ ডোজ টিকা।

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়েছে গত বছরের ৮ মার্চ তারিখে। সেই হিসেবে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের এক বছর পূর্ণ হলো আজ। গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। একই বছরের ৮ মার্চ থেকে চলতি বছরের ৭ মার্চ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৫০ হাজার ৩৩০ জন। এসময় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৪৬২ জনের।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৮মার্চ, ২০২১)