দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: কম্প্রেসর গবেষণায় সাফল্য দেখিয়েছেন ওয়ালটনের প্রকৌশলীরা। সেই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের সবচেয়ে ‘সাইলেন্ট ও ডিউর‌্যাবল’ রেফ্রিজারেটর কম্প্রেসর উৎপাদন শুরু করেছে বাংলাদেশি ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। সেকেন্ড জেনারেশন বা দ্বিতীয় প্রজন্মের নতুন ওই দুইটি মডেল দেশের একমাত্র কমপ্রেসর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের কমপ্রেসর গবেষণা ও উন্নয়ন (আরএন্ডডি) বিভাগের নতুন উদ্ভাবন।

শুধু ওয়ালটন নয়; দেশিয় শিল্প ও বাংলাদেশের জন্য এটি এক বিশাল মাইলফলক।

এ উপলক্ষে গত সোমবার (৫ এপ্রিল) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের হেডকোয়ার্টারে অনলাইন প্লাটফর্মে এক লঞ্চিং প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়। সে সময় দ্বিতীয় প্রজন্মের ওই দুই মডেলের কমপ্রেসর উদ্বোধন করা হয়। মডেল দুটির নাম- এইচভিওয়াই৯৪এএ এবং এইচভিওয়াইএক্স৯এএ।

প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দেন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ। অনলাইনে আরও যুক্ত ছিলেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলমগীর আলম সরকার, ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর বিভাগের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) ইউসুফ আলী, ওয়ালটন কমপ্রেসর বিভাগের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) রবিউল আলম, ওয়ালটন আরএন্ডডি বিভাগের চিফ কো-অর্ডিনেটর তাপস কুমার মজুমদার, কমপ্রেসর আরএন্ডডি বিভাগের প্রধান মীর মুজাহেদীন ইসলাম, কমপ্রেসর সিওও নাসির উদ্দিন মণ্ডল, মেকানিক্যাল মেইনটেনেন্স বিভাগের প্রধান নিজাম উদ্দিন মজুমদার, ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেনেন্স বিভাগের প্রধান কামরুল হাসান, প্রসেস ডেভলপমেন্ট বিভাগের প্রধান কৃষ্ণানন্দ বৈরাগী, কোয়ালিটি কন্ট্রোল বিভাগের প্রধান তাহসিন হক, ওয়ালটন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম প্রমুখ।

ওয়ালটন হাইটেকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ বলেন, ‘কমপ্রেসর আরএন্ডডি টিমের উদ্ভাবিত দ্বিতীয় প্রজন্মের বিশ্বের লেটেস্ট প্রযুক্তির কমপ্রেসর তৈরি ওয়ালটনের জন্য এক বিরাট সাফল্য। নিঃসন্দেহে এই সফলতা শুধু ওয়ালটনেরই নয়; দেশিয় ভারি প্রযুক্তি শিল্প ও বাংলাদেশের জন্যও এক বিশাল মাইলফলক।’

তিনি আরও বলেন, কমপ্রেসর উৎপাদন শিল্প বাংলাদেশের আরেকটি সম্ভাবনাময় খাত। রয়েছে বিশাল আন্তর্জাতিক বাজার। ওয়ালটনের টার্গেট বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ কমপ্রেসর রপ্তানিকারক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করা।

কমপ্রেসর বিভাগের সিইও রবিউল আলম বলেন, নিজস্ব চাহিদা মিটিয়ে ওয়ালটনের তৈরি কমপ্রেসর ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। রপ্তানির পরিমাণও বেশ ভালো। নতুন এই দুইটি মডেলের উদ্ভাবন ও উৎপাদন শুরু হওয়ায় রপ্তানির পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।

কমপ্রেসর আরএন্ডডি বিভাগের প্রধান মীর মুজাহেদীন ইসলাম বলেন, বিশ্বের লেটেস্ট প্রযুক্তির ‘সাইলেন্ট ও ডিউর‌্যাবল’ কমপ্রেসর ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ তৈরি করছে ওয়ালটন। উৎপাদনের প্রতিটি ধাপে মান নিয়ন্ত্রণে অনুসরণ করা হচ্ছে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি। কারখানায় রয়েছে আন্তর্জাতিকমানের মান নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ল্যাব সরঞ্জাম ও মেশিনারিজ। ওয়ালটন কারখানায় তৈরি হচ্ছে মাদারবোর্ড। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত সর্বাধুনিক হেমি অ্যান-ইকোয়িক অ্যাকুইস্টিক চেম্বারের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হচ্ছে কম্প্রেসরের সর্বনিম্ন নয়েজ লেভেল।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এশিয়ার ৮ম ও বিশ্বের ১৫তম কমপ্রেসর উৎপাদনকারী দেশ। দেশের একমাত্র কমপ্রেসর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। যার বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ৪ মিলিয়ন। ২০২৫ সালের মধ্যে উৎপাদন সক্ষমতা ১০ মিলিয়নে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। শুরু থেকেই জার্মানভিত্তিক বিশ্বের একটি খ্যাতনামা কমপ্রেসর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণ যন্ত্রাংশ নিচ্ছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৭ এপ্রিল, ২০২১)