দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বহুমাত্রিক ও প্রথাবিরোধী লেখক, গবেষক ও ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৪ সালের ১২ আগস্ট জার্মানির মিউনিখ শহরে তিনি মারা যান। এর আগে ওই বছর একুশে বইমেলায় হুমায়ুন আজাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়।

প্রথাবিরোধী এ লেখক ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বহুমুখী সাহিত্য প্রতিভার অধিকারী স্বতন্ত্র ও প্রথাবিরোধী লেখক হিসেবে সুপরিচিত হুমায়ুন আজাদ কর্মজীবনে অধ্যাপনা পেশা বেছে নেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

১৯৯২ সালে প্রকাশিত হয় তার আলোচিত প্রবন্ধের বই ‘নারী’। এই গ্রন্থ প্রকাশের পর মৌলবাদীদের রোষানলে পড়েন তিনি। তবে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অলৌকিক ইস্টিমার’ প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে। গবেষক ও প্রাবন্ধিক হুমায়ুন আজাদ ৯০-এর দশকে একজন প্রতিভাবান ঔপন্যাসিক হিসাবেও আত্মপ্রকাশ করেন।

তার প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো- জ্বলো চিতাবাঘ, সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে, যতোই গভীরে যাই মধু যতোই ওপরে যাই নীল, আমি বেঁচেছিলাম অন্যদের সময়ে অন্যতম। তার প্রকাশিত উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে-ছাপ্পানো হাজার বর্গমাইল, সব কিছু ভেঙে পড়ে, যাদুকরের মৃত্যু; শুভব্রত, তার সম্পর্কিত সুসমাচার অন্যতম। প্রবন্ধ ও গবেষণা- রবীন্দ্র প্রবন্ধ : রাষ্ট্র ও সমাজ চিন্তা, শামসুর রাহমান :নিঃসঙ্গ শেরপা, বাংলা ভাষার শত্রুমিত্র, কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু, বাক্যতত্ত্ব, তুলনামূলক ও ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান, শিল্পকলার বিমানবিকীকরণ ও অন্যান্য প্রবন্ধ, ভাষা-আন্দোলন : সাহিত্যিক পটভূমি, নারী, নিবিড় নীলিমা, মাতাল তরণী, সীমাবদ্ধতার সূত্র, আধার ও আধেয়, দ্বিতীয় লিঙ্গ।

এছাড়া বহু শিশুতোষ গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন তিনি। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার, অগ্রণী শিশু-সাহিত্য পুরস্কার ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক পুরস্কার। ২০১২ সালে পান মরণোত্তর একুশে পদক।

২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশে গ্রন্থমেলা থেকে ফেরার পথে হুমায়ুন আজাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়। একই বছর ১১ আগস্ট জার্মানির মিউনিখ শহরে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে জমিয়াতুল মুজাহেদিনের জঙ্গিরা এ হামলার কথা স্বীকার করে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১২আগস্ট, ২০২১)