দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: প্রাইম মুভার (ট্রেইলার), ট্রাক ও কাভার্টভ্যান শ্রমিক-মালিকদের ধর্মঘটের ফলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো পণ্য পরিবহনে অচলাবস্থা অব্যাহত রয়েছে।

সারাদেশে চলমান ৭২ ঘণ্টার এ ধর্মঘটের ২৪ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হলেও ফলপ্রসূ কোনো আলোচনা না হওয়ায় কোনো সুরাহা হয়নি।

এদিকে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে আমদানি রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, শিপিং এজেন্টসহ বন্দর ব্যবহারকারীরা।

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মাইনুদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ১৫ দফা দাবিতে গতকাল সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে প্রাইম মুভার (ট্রেইলার), ট্রাক ও কাভার্টভ্যান শ্রমিক-মালিকদের ৭২ ঘণ্টা ধর্মঘট চলমান রয়েছে। ফলে চট্টগ্রাম থেকে কোনো ধরনের পণ্য পরিবহন করছে না ট্রেইলার, ট্রাক ও কাভার্টভ্যানগুলো।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, পণ্য পরিবহনের কর্মবিরতির কারণে বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি বন্ধ আছে। ডিপোতে কনটেইনার যাওয়া ও ডিপো থেকে রফতানির কনটেইনার আসা বন্ধ রয়েছে। তবে বন্দরের অভ্যন্তরে ছোট ছোট কাজ চলছে।


শ্রমিক নেতৃবৃন্দ জানান, আজ বুধবার ঢাকায় পরিবহন মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে দাবি আদায়ের ব্যাপারে সুরাহা হলে শ্রমিক সংগঠন ধর্মঘট স্থগিত হতে পারে।

বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান-ট্রাক-প্রাইমমুভার পণ্যপরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশনের ১৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- মোটরযান মালিকদের ওপর আরোপিত অগ্রিম আয়কর বা বর্ধিত আয়কর অবিলম্বে বাতিল করতে হবে; ইতোমধ্যে আদায় করা বর্ধিত কর স্ব স্ব মালিককে ফেরত দিতে হবে; পুলিশের ঘুষ বাণিজ্যসহ সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে; গাড়ির কাগজপত্র চেকিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করতে হবে; যেসব চালক ভারী মোটরযান চালাচ্ছেন তাদের সহজ শর্তে এবং সরকারি ফি-র বিনিময়ে অবিলম্বে ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে হবে; সব শ্রেণির মোটরযানে নিয়োজিত সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মতো রেশনিং সুবিধার আওতায় আনতে হবে; চট্টগ্রামে অবস্থিত ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মনোনীত প্রতিনিধি এবং সব ড্রাইভার ও সহকারীকে চট্টগ্রাম বন্দরে হয়রানিমুক্ত প্রবেশের সুবিধার্থে বাৎসরিক নবায়নযোগ্য বায়োমেট্রিক স্মার্টকার্ড দিতে হবে; প্রতি ৫০ কিলোমিটার পরপর পণ্যপরিবহন শ্রমিকদের জন্য দেশের সড়ক-মহাসড়কের নিরাপদ দূরত্বে বিশ্রামাগার ও কার্ভাডভ্যান-ট্রাক-প্রাইমমুভার টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে; সারাদেশের জন্য একই পরিমাণ ওজন নির্ধারণ করে অতিরিক্ত (ওভারলোড) পণ্যপরিবহন বন্ধে লোডিং পয়েন্ট তথা পণ্যপরিবহনের উৎসস্থলে সরকার নির্ধারিত ওজন নিশ্চিত করে পণ্যবাহী গাড়িগুলোতে মালামাল লোড করতে হবে; লোড করা গাড়িগুলোকে উৎসস্থলে পণ্যের ওজনস্লিপ দিতে হবে।

গত শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর কদমতলীতে আন্তঃজেলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ৭২ ঘণ্টা কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১)