দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায়ে যে পাঁচ জন বুয়েটছাত্র যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন, তাদেরও ফাঁসি চাইলেন মা রোকেয়া খাতুন। বুধবার দুপুরে রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি একথা বলেন।

রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘রায়ে ২০ জনের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে আর ৫ জনের যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে আদালত। সব আসামির ফাঁসির রায় দেওয়া হলে আমরা আরো খুশি হতাম। তবে আদালতের রায় পর্যালোচনা করে দেখব, পূর্ণাঙ্গ রায় থেকে অন্যদের ফাঁসির জন্য আবেদন জানাবো উচ্চ আদালতে।’

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর কামরুজ্জামান আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় ২৫ আসামির মধ্যে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। বাকি পাঁচ জনকে দেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

রায় ঘোষণার আগে ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে বাবা বরকত উল্লাহও বলেছিলেন, তিনি সব আসামির ফাঁসি চান।

আবরারে ভাই আবরার ফায়াজও রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে দ্রুত রায় কার্যকর চান।

আবরার হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোসের্স, ১৬ ব্যাচ), শামসুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল) এবং মাহামুদ সেতু (কেমিকৌশল)। তাদের নাম এজাহারে ছিল না।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এজাহারভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার (মেকানিক্যাল ইঞ্জনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশারফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মুজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুল ইসলাম (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল, ১৭তম ব্যাচ), মাহমুদুল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), এ এস এম নাজমুস সাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ)।

বুয়েট ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে, সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), মোয়াজ আবু হোরায়রা (সিএসই ১৭তম ব্যাচ), আকাশ হোসেন (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ)। এদের মধ্যে অমিত ও মুন্নার নাম হত্যা মামলা এজাহারে উল্লেখ ছিল না।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বিচারক। অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড হবে তাদের।

আবরার হত্যাকাণ্ডের এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন তিন জন। তারা হলেন- এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাহমুদুল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) এবং মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল)।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ০৮ ডিসেম্বর, ২০২১)