সানাউল্লাহ ফাহাদ, জবি প্রতিনিধি: নিম্নমানের লিফট দিয়ে চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ভবন। এতে লিফট আতঙ্কে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। নিম্নমানের এ লিফটে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার শঙ্কায় রয়েছেন তারা।

সূত্র থেকে জানা যায়, নতুন ভবনের পুরোনো লিফটের জায়গায় নতুন আধুনিক মানের লিফট স্থাপনের কথা থাকলেও সেখানে নিম্নমানের ‘ক্লেমান’ কোম্পানির লিফট ব্যবহার করা হয়েছে। ইউরোপীয় উন্নত কোম্পানির 'এ' গ্রেডের লিফটের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলা থাকলেও ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের মানের লিফট।

সরেজমিনে দেখা যায়, লিফটে প্রতিনিয়ত নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রায়ই লিফট চলন্ত অবস্থায় আটকে যায়। এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে।

নতুন ভবনে স্থাপনকৃত তিনটি লিফটের মধ্যে একটি লিফট বর্তমানে চালু রাখা হয়েছে। শিক্ষকদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে পুরনো একটি লিফট। ১২তলা এ ভবনটিতে নিয়মিত প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থী আসা যাওয়া করে। অন্য লিফটগুলো বন্ধ থাকার কারণে সবসময়ই সচল লিফট দুইটিতে সিরিয়াল পড়ে, ধাক্কাধাক্কি করে শিক্ষার্থীদের লিফটে উঠতে হয়। অনেক সময় পরীক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা হলে ঠিকমত পৌঁছাতে পারেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের ক্লাস পরীক্ষার জন্য লিফট দিয়ে উপরে উঠা নামার সময় মাঝে মাঝে আটকে যায়। এসময় আমাদের অনেক আতঙ্ক কাজ করে। কোন সময় কী হয়ে যায় আতঙ্কে থাকি। আমরা খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাই৷

তৃতীয় বর্ষের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, লিফটের জন্য অনেক সময়ে নির্ধারিত সময় পর ক্লাসে যেতে হয়। ধাক্কাধাক্কি করে লিফটে উঠতে হয়। অনেক সময় পরীক্ষার হলেও দেরি হয়। তাছাড়া এই ভোগান্তি আমাদের মেয়েদের ক্ষেত্রে বেশি। পুরুষদের সাথে ধাক্কাধাক্কি করে লিফটে উঠতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। কতৃপক্ষ এখন পর্যন্ত সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ করেনি।

তৃতীয় বর্ষের ম্যানেজমেন্ট স্ট্যাডিজ বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, লিফটের অবস্থা খুবই খারাপ। মাঝেমধ্যেই হ্যাং করে। একবার তো আটকা পড়েছিলাম। যে কোন সময় দূর্ঘটনাও ঘটতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা জায়গায় এতোটা নিম্নমানের লিফট ব্যবহার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা একবারও ভাবা হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লিফট অপারেটরের সাথে কথা বলে জানা যায়, লিফট চলন্ত অবস্থায় প্রায়ই আটকে যায়। এ-সময় রিস্টার্ট দিয়ে পুনরায় লিফট চালু করতে হয়।

এবিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, আমরা অফিশিয়ালি লিফট গুলো বুঝে পাইনি। বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য বলা হলেও তারা এখনও আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। এ কারণে আমরা কোন ব্যবস্থাও নিতে পারছি না। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি যেন শীঘ্রই একটা ব্যবস্থা নেয়া যায়।

এবিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের টেন্ডারে কাজ পাওয়া ওয়াহিদ কন্সট্রাকশনের ম্যানেজার হেলাল উদ্দিন আহমদ বলেন, লিফটের প্রসঙ্গের আগে সম্পূর্ণ ভবন বুঝে নেওয়ার মতো কোনো উদ্যোগ এখনো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নেয়নি। আমরা কাজ বুঝিয়ে দেয়ার জন্য প্রস্তুত। কাজ বুঝিয়ে দেয়ার পর ভাল মন্দ যাছাই করা যাবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৮ জানুয়ারি, ২০২২)