দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) চলমান পরিস্থিতি নিরসনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তবে এ বৈঠকে কোনো সমাধান না আসায় অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টা ২০ মিনিটে শুরু হওয়া এ বৈঠক শেষ হয় রাত আড়াইটায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনের ১২৯ নম্বর কক্ষে জুম প্ল্যাটফর্মে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে চলমান সংকট নিয়ে কোনো সমাধানে আসতে পারেননি আন্দোলনকারীরা। এ কারণে রোববার (২৩ জানুয়ারি) সকালে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষামন্ত্রীকে লিখিত আকারে দাবি-দাওয়া জানাবেন তারা। সেইসঙ্গে নিজেদের মধ্যে আলোচনার পর পরবর্তী করণীয় সম্পর্কেও সিদ্ধান্ত নেবেন শিক্ষার্থীরা।

অন্যদিকে, শিক্ষামন্ত্রীও আন্দোলনকারীদের দাবির কথা লিখিতভাবে জমা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। দাবি পাওয়ার পর তিনি এ নিয়ে পরবর্তী উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। একই সঙ্গে মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙার অনুরোধ জানান। তবে চলমান পরিস্থিতির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন। রোববার পুনরায় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলটির বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।

বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এরই মধ্যে অনশনরত ২৩ জনের সবাই অসুস্থ হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা আর বেশি অবস্থান করলে অসুস্থতা আরও বাড়বে।

শিক্ষার্থীদের আইনগত ও অ্যাকাডেমিক সমস্যা যাতে না হয় সেজন্য তিনি সব বিষয় দেখবেন বলেও আশ্বস্ত করেছেন। আন্দোলনরত ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেছেন তারা যেন অনশন ভেঙে আন্দোলন থেকে সরে আসেন। তিনি আলোচনার ব্যাপারে প্রস্তুত রয়েছেন বলেও শিক্ষার্থীদের জানিয়েছেন।

শিক্ষামন্ত্রীর বরাত দিয়ে নাদেল বলেন, রোববার শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে প্রস্তাবনা পাঠালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সবার সঙ্গে কথা বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রোববার আমাদের জানাবেন। উপাচার্যকে ছুটি দেওয়া বা অপসারণের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

এসময় তার সঙ্গে ছিলেন- সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিধান কুমার সাহা, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ নেন- শাহরিয়ার আবেদিন, অপূর্ব, মীর রানা, সাব্বির, নাফিসা আঞ্জুম ইমু, রোমিও, উমর ফারুক, ইয়াসির সরকার, সাদিয়া আফরিন ও মোহাইমিনুল বাশার রাজ।

গত ১৩ জানুয়ারি থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিও সামনে আসে আন্দোলনে।

গত রোববার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৩ জানুয়ারি, ২০২২)