দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: নায়করাজ রাজ্জাকের জন্মদিনে (২৩ জানুয়ারি, রবিবার) রাজ্জাকের সঙ্গে কাটানো সময়সহ নানা বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন নায়ক আলমগীর।

নায়করাজের সঙ্গে অনেক চলচ্চিত্রে পর্দা ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন নায়ক আলমগীর। তবে দুজনের মধ্যে সম্পর্কটা কেবল পেশাগত জায়গায় সীমাবদ্ধ ছিল না। কাজ করতে করতে গভীর বন্ধুত্বও গড়ে উঠেছিল বরেণ্য ২ অভিনেতার মধ্যে।

আলমগীর বলেন, ‘এ দেশের বাঙালিদের বাংলা সিনেমা দেখা শিখিয়েছেন নায়ক রাজ্জাক। বলতে পারি, বাঙালিকে তিনি বাংলা সিনেমা দেখতে হলমুখী করিয়েছেন। তার অবদান কত বড়, এ থেকে তা বোঝা যায়। উর্দু সিনেমার ছড়াছড়ি ছিল তখন। উর্দু সিনেমা থেকে বাংলা সিনেমার দিকে দর্শক ফিরিয়েছেন তিনি। তার অভিনীত বাংলা সিনেমা মানুষ এতটাই গ্রহণ করেছিল। আমি কিংবা আমরা বাংলা সিনেমা দেখতে শিখেছিলাম তার অভিনীত সিনেমা দিয়ে। চিরকাল তার প্রতি ঋণ থাকবে। আমি ঋণী হয়ে আছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘কারো নাম ম্যানশন করতে চাই না। সবাইকে ভালোবাসি। তারপরও বলছি, এফডিসিতে অনেকের নামে ফ্লোর হয়েছে। কিন্ত রাজ্জাকের নামে কী আছে? তার সমতুল্য তো দূরের কথা, তার কাছাকাছিই তো কেউ নেই। এটা আমার মতামত। রাজ্জাককে কতটা মূল্যায়ন করেছি আমরা? আজকে বলা হয় চলচ্চিত্রের দুর্দশার কথা। কিন্ত এই দুর্দশার জন্য প্রকৃত শিল্পীকে মূল্যায়ন না করাও দায়ী।’

‘একটি গাছের মূল হচ্ছে শেকড়। শেকড়ে পানি না দিলে গাছ বড় হবে কেমন করে? রাজ্জাক এ দেশের চলচ্চিত্রের সত্যিকারের শেকড়। তাকে কতটা সম্মান জানাতে পেরেছি? আমি জোর দিয়ে বলব, রাজ্জাক একজনই। অনেকে যাবে এবং আসবে কিন্ত রাজ্জাক থাকবেন। সবার ভালোবাসায় বেঁচে থাকবেন। দূর থেকে তাকে বলব, রাজ্জাক ভাই, মনে রাখবেন আপনাকে মনে রাখার ও শ্রদ্ধা জানানোর কিছু লোক এখনো আছে। আপনাকে ভালোবাসার কিছু লোক এখনো বেঁচে আছে। আমি তাদেরই একজন। যতদিন বাঁচব আপনাকে ভালোবেসে যাব, সম্মান করে যাব’, যোগ করেন তিনি।

নায়ক রাজ্জাককে নিজের‘'মেন্টর, বন্ধু, গাইড ও ফিলোসফার’ উল্লেখ করে আলমগীর বলেন, ‘দুঃখ হয়, কষ্ট লাগে, এই প্রজন্ম তাকে কতটা জানে? তাকে জানতে হলে তার সিনেমা দেখতে হবে, তার জীবন জানতে হবে, তার কাজ দিয়ে বিচার করতে হবে।’

‘মনে পড়ে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরের বছর তার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। আরো পরে এসে ধীরে ধীরে গভীর সম্পর্ক হয়েছিল। তিনি বয়সে আমার বড় ছিলেন। তাকে ভাই বলে ডাকতাম। কিন্তু ভালোবাসা দিয়ে এতটাই কাছে টেনে নিয়েছিলেন,তার জুনিয়র হয়েও বন্ধু বনে গিয়েছিলাম। আজ তার জন্মদিন। এই বিশেষ দিনে দূর থেকে ভালোবাসা জানাই। বিশেষ দিনে কত স্মৃতি মনে পড়ছে! বেশি মনে পড়ছে তার সঙ্গে আড্ডার স্মৃতিগুলো’, বলেন আলমগীর।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৫ জানুয়ারি, ২০২২)