দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে তার পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছেন।

দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম জাতির উদ্দেশে কোনো ভাষণ দিলেন প্রেসিডেন্ট রাজাপাক্ষে। ভাষণে তিনি প্রেসিডেন্টের কিছু ক্ষমতা সংসদের কাছে হস্তান্তর করার প্রস্তাব দেন, যদিও কোনো সময়সীমার কথা বলেননি।

অনেকেই সমালোচনা করছেন যে তার বক্তব্য আসল সমস্যাগুলোর সমাধান দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

এর আগে বুধবার রাতে গুজব ছড়িয়ে পড়ে গোটাবায়া রাজাপাক্ষে এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ভারতে পালিয়ে গেছে। সেই খবর আবার কলোম্বোয় ভারতের হাইকমিশন থেকে নাকচ করা হয়।

গোটাবায়া রাজাপাক্ষে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে পারেন এমন সম্ভাবনা থেকে আরো বিক্ষোভকারীরা ত্রিঙ্কোমালির নৌঘাঁটিতে জড়ো হয়েছে।

শ্রীলংকার সেনাবাহিনীও নিশ্চিত করেছে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের পর ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে মাহিন্দা রাজাপাকশা বর্তমানে উত্তর-পূর্বের একটা নৌঘাঁটিতে অবস্থান করছেন।

শ্রীলংকাজুড়ে বিক্ষোভ চলছে
এদিকে বিক্ষোভকারীরা কারফিউ ভেঙে দ্বিতীয় রাতের মত বিক্ষোভ করেছে। তাদের দাবি এখন প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ।

একজন বিক্ষোভকারী বিবিসিকে বলেছেন ‘কারফিউ ভেঙে আমাদের এই বিক্ষোভ করতে হচ্ছে কারণ আমাদের কোন উপায় নেই। আমরা এখনো ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। এখানো , কেরোসিন, পেট্রোল, ডিজেল ও বিদ্যুৎ নেই।’


‘গত ৩০ দিন আপনি কোথায় ছিলেন? মানুষের ওষুধ, খাদ্য কিছুই নেই। পুরো দেশ স্থবির হয়ে আছে,’ কলম্বোতে একজন বিক্ষোভকারী কাভিনদ্য থেন্নাকুন বিবিসিকে বলেছিলেন।

‘তিনি [গোটাবায়া রাজাপাক্ষে] যে সংস্কারগুলো প্রস্তাব করছেন, সেগুলো আমাদের প্রয়োজন নেই। আমরা এখন চাই তার পদত্যাগ- গোটাবায়া রাজাপাক্ষে কেন সেটি বুঝতে পারছেন না।’

এদিকে দেশজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে কেউ লুটপাট করলে, জীবনের ক্ষতি করলে তাদের গুলি করার। কারফিউ চলাকালে কলোম্বোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলের একটা রিসোর্টে ভাঙচুর করা হয়েছে।

অনেক দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। সোমবার থেকে এ পর্যন্ত নয় জন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।

সেনা অভ্যুত্থানের গুজব
এদিকে বিরোধী রাজনীতিবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, এই সহিংসতা সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের অজুহাত হিসেবে দেখাতে পারে। কলোম্বোর রাস্তায় বিপুলসংখ্যক সৈন্য অস্ত্রসজ্জিত গাড়িবহর দেখে এমন একটা গুজব ছড়ায় যে সেনা অভ্যুত্থান হতে পারে।

প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাক্ষে বলেছেন, তিনি অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন, তার উদ্দেশ্য একটা ঐকমত্যের সরকার তৈরি করা।

কিন্তু প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বলেছে, প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা অন্তর্র্বতীকালীন প্রশাসনের অংশ হবে না।
খবর বিবিসি

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ১২ মে, ২০২২)