দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার পর এবার রাজধানীর বাজারগুলোয় সবজি ও ডিমের দাম বেড়েছে। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে।

দাম বাড়ার ফলে এখন তিনটি সবজির কেজি ১০০ টাকা স্পর্শ করেছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি সবজির কেজি ১০০ টাকার কাছাকাছি। বাকি সবজিগুলোর দামও বেশ চড়া। ৫০ টাকার নিচে হাতে গোনা দু- একটি সবজি পাওয়া যাচ্ছে।

আজ শুক্রবার (২০ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা এখন সব থেকে বেশি দামে বিক্রি করছেন গাজর। বাজার ও মানভেদে এই সবজিটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে গাজরের কেজি ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা।

দাম বাড়ার এ তালিকায় রয়েছে বরবটি ও কাঁকরোল। গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর কাঁকরোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে এই সবজিটির কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে ছিল।

নতুন করে দাম না বাড়লেও বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে করলা। কাঁচা পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে না বাড়লেও পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গার দাম কিছুটা বেড়েছে। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ঝিঙে ও চিচিঙ্গার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

কারওয়ানবাজারে সবজি কিনতে আসা আমিনুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় অধিকাংশ সবজির দাম বেড়েছে। কিন্তু বাজারে সবজির সরবরাহ তো কম দেখছি না। অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়ার কারণে কিছু ব্যবসায়ী সুযোগ নেওয়ার জন্য সবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাজারে কারও কোনো নজরদারি নেই।

এদিকে গত সপ্তাহে বেড়ে যাওয়া রসুন এখনো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা। আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের কেজিও গত সপ্তাহের মতো কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। পাম অয়েলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা। আর বোতলের পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৯৮০ থেকে ৯৮৫ টাকা।

তবে সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন ৪০ থেকে ৪৫ বিক্রি হচ্ছে। তবে কোনো কোনো ব্যবসায়ী ৩৫ টাকা কেজিতেও পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।

ঈদের আগে কেজি ৭০০ টাকা উঠে যাওয়া গরুর মাংসের দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা বিক্রি করছেন। তবে মহল্লার সাপ্তাহিক ব্যবসায়ীরা গরুর মাংসের কেজি বিক্রি করছেন ৭২০ টাকা কেজি দরে।

গরুর মাংস বাড়তি দামে বিক্রি হলেও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কমে এখন ১৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ টাকা। আর ঈদের আগে ছিল ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা। তবে সোনালি মুরগির কেজি আগের মতো ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা বেড়েছে। এতে এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০ টাকা।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছের দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা। এছাড়া ৫০০-৬০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া, পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৬০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা।

ভরা মৌসুমেও দাম বেড়েছে চালের। মিনিকেট চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা। এক সপ্তাহ আগে মিনিকেটের কেজি ছিল ৬৪ টাকা। ২৮ চালের কেজি ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। আগে দাম ছিল ৪৮ টাকা কেজি। নাজিরশাইল চালের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হতো ৬৮ থেকে ৭০ টাকায়। বাজারে পোলাও-এর চাল বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। সাত দিন আগেও পোলাও-এর চালের কেজি ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা।

বাজারের ক্রেতা আরাফাত হোসেন বলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় মূল্যের দাম ঊর্ধ্বগতি থাকায় সবচেয়ে বেশি কষ্টে দিন পার করছেন মধ্যবিত্ত মানুষরা। তারা কাউকে কিছু বলতেও পারছেন না, সইতেও পারছেন না।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ২০ মে, ২০২২)