দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বরগুনায় সংসদ সদস্যের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠিচার্জের ঘটনায় আলোচিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীকে বরগুনার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে নিযুক্ত করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

এদিকে জাতীয় শোক দিবসে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সামনেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সকালে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদী হাছান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছিল। এ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এসএম তারেক রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তবে তদন্তের বিষয়ে জানতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ও তদন্ত কমিটির প্রধান এসএম তারেক রহমানকে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এর আগে গতকাল রাতে একটি শোক সভায় ‘পুলিশের উদ্দেশ্যই ছিল মারপিট করা’ বলে মন্তব্য করেন এমপি শম্ভু। এ সময় তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহররম আলীকে প্রত্যাহার ও তার বিচারের দাবি জানান।

এর পরপরই জেলা ছাত্রলীগ সংবাদ সম্মেলনে জানায়, এ ঘটনায় ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা ছিল না, কেউ সম্পৃক্ত থেকে থাকলেও সে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস করে না, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না। এ সময় জেলা পুলিশকে ধন্যবাদ জানান তারা।

প্রসঙ্গত, ১৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে ফুল দিতে যান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা ও সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান ইমরান। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ফেরার সময় শিল্পকলা একাডেমির সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত গ্রুপের সদস্যরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে আহত হন অন্তত ৬০ জন।

এর আগে দীর্ঘ আট বছর পর গত ১৭ জুলাই বরগুনা শহরের সিরাজ উদ্দীন টাউন হল মিলানায়তনে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৪ জুলাই রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির অনুমোদন দেন। এতে জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩৩ সদস্যের নাম প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকেই সদ্য ঘোষিত এ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বরগুনা শহরে পদবঞ্চিতরা প্রতিবাদ জানাতে থাকে।