দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সঙ্গে উজবেকিস্তানের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে বেসরকারি পর্যায়ে দুইদিনের বিজনেস সামিট আয়োজন করছে মধ্য এশিয়ার কয়েকটি দেশের ৭ প্রতিষ্ঠান। আগামী ২৬ ও ২৭ মে উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দের উইনদাম হোটেলে সামিটটি হবে।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় আয়োজকরা।

আয়োজক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বাংলাদেশ ট্রেড সেন্টার (বিটিসি), বাংলাদেশ; গ্লোবাল এডুকেশন কনসালটিং এন্ড এক্সিবিউশন লিমিটেড, ইউকে; টার্ক বাংলা গ্রুপ, তুর্কি; ডার আল বারাকা ট্রাভেল এন্ড টুরিজম এলএলসি, ইউএই; লোটা ওভারশিজ লিমিটেড, বাংলাদেশ; ডেভেলপিং বাংলাদেশ এবং জিসান এন্টারপ্রাইজ, কিরগিস্তান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উজবেকিস্তানে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি পোশাক খাতের কাঁচামালসহ তুলা আমদানির সুযোগ রয়েছে। এছাড়া জনশক্তি রপ্তানিরও ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে মধ্য এশিয়ার এ দেশটিতে।

এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রথমবারের-মত উজবেকিস্তান-এর রাজধানী তাসখন্দে দুই দেশের বেসরকারি পর্যায়ের যৌথ উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ-উজবেকিস্তান বিজনেস সামিট অ্যান্ড বিটুবি’ আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে দুই দেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা তাদের নিজস্ব পণ্য ও সেবা তুলে ধরতে পারবেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে অবস্থিত উজবেকিস্তানের সম্মানীয় কনস্যুলর ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. তাহের শাহ, বাংলাদেশ ট্রেড সেন্টারের (বিটিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জয়নাল আব্দীন এবং তুর্কি বিডি গ্রুপের প্রধান নির্বাহী সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

ভার্চুয়ালি যুক্ত হন গ্লোবাল এডুকেশন কনসালটিংয়ের চেয়ারম্যান শওকত এ ক্ষুদা প্রিন্স।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ ট্রেড সেন্টারের (বিটিসি) সহযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা ৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা এ সামিটের আয়োজন করছে। মিটের মূল উদ্দেশ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, বাইসাইকেল, সিরামিক পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, ফার্নিচার, হস্তশিল্প, কাপড়, পর্যটন, আইটি, আইটিএস, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্লাস্টিক, শিক্ষা সেবা, মানব সম্পদ ইত্যাদি পণ্য ও সেবার ভালো বাজার হতে পারে উজবেকিস্তান। এছাড়াও উজবেকিস্তান থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ একই সঙ্গে বাংলাদেশি কোম্পানিসমূহের বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য উজবেকিস্তান হতে পারে আদর্শ গন্তব্য। দেশটি বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য মধ্য এশিয়া তথা পূর্ব ইউরোপের প্রবেশদ্বার উন্মুক্ত করবে।

ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. তাহের শাহ বলেন, উজবেকিস্তানের লোকজন যখন ইউরোপ আমেরিকা থেকে পোশাক পণ্য কেনে তখন তারা দেখে ট্যাগ লাগানো থাকে মেইড ইন বাংলাদেশ। তাই তাদের আগ্রহ বাড়ছে। পাশাপাশি ওই দেশের সরকারও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিচ্ছেন। প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ মাত্র ২ টাকা, গ্যাস প্রায় ফ্রি, এছাড়া জায়গাও দিচ্ছে। এসব সুবিধা নিচ্ছে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। আমাদের দেশের উদ্যোক্তারাও এর সুযোগ নিতে পারেন। এজন্য আমাদের দুই দেশের যোগাযোগ বাড়ানো জরুরি। এমন সময় এ ধরনের সামিট ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর সহযোগিতা করবে।

বিটিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জয়নাল আব্দীন বলেন, বর্তমানে উজবেকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি কোনো বিমান যোগাযোগ নেই। অন্যদেশ হয়ে যেতে হয়। এতে দুই লাখ টাকার বেশি বিমান ভাড়া লাগে। এ খরচ কমাতে এখন দিল্লি হয়ে যেতে হয়। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ উন্নতি করতে হলে সরাসরি বিমান ফ্লাইট জরুরি।

২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ-উজবেকিস্তানের মধ্যে মোট ৪ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ২ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের পণ্য, অন্যদিকে উজবেকিস্তান থেকে ২ কোটি ১৪ লাখ ডলারের সমপরিমাণ পণ্য আমদানি করেছে। মূলত বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য, পোশাক ও বস্ত্র খাতের পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। আর দেশটি থেকে মূলত সুতা ও বিভিন্ন ধরনের ফল আমদানি করা হয়।