দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, বিএনপিকে পাঠানো চিঠির সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ, আমরা সরকারের আজ্ঞাবহ নয়। কিংবা কূটকৌশল বা সংলাপের জন্যও বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বরং অনানুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য দলটিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এমন মন্তব্য করেন।গত বছরের শুরুতে হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই দফায় সংলাপ করে। তবে বিএনপি এবং এর মিত্র রাজনৈতিক দলগুলো কোনো সংলাপে অংশ নেয়নি। বিএনপিকে না পাওয়ার পর সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, তারা সংলাপ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে এই দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েই যাবেন।

বিএনপি এখন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। এর বাইরে কোনো বিষয় নিয়ে ইসির সঙ্গে সংলাপে যেতে নারাজ তারা। ইসি বলছে, নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে, তা ঠিক করার এখতিয়ার তাদের নেই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, নির্দলীয় সরকার ফিরিয়ে আনার কোনো সুযোগ নেই। এমন অবস্থার মধ্যে ২৩ মার্চ বিএনপিকে সংলাপে অংশ নেওয়ার জন্য ইসির পক্ষ থেকে ফের চিঠি দেওয়া হয়। আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার জন্য সুবিধামতো সময়ে বৈঠক করতে বিএনপিকে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন।

হঠাৎ নির্বাচন কমিশনের এমন উদ্যোগ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানান আলোচনা হচ্ছে। বিএনপিকে ভোটে আনতে এই চিঠির পেছনে সরকারের ইশারা আছে এমন কথাও বলা হচ্ছে। প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর পরামর্শে এমন চিঠি এমন গুঞ্জনও আছে।

এ অবস্থায় সিইসি জানান, বিএনপিকে নির্বাচন কমিশন সংলাপে আমন্ত্রণ জানায়নি। অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় ডাকা হয়েছে। এই আমন্ত্রণ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেও হয়নি। এটা কোনো কূটকৌশল নয়।

এদিকে সিইসি ওই চিঠিতে লেখেন, ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন করে আসছি। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সংসদ নির্বাচনের কথা অনুধাবন করে আসছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বর্তমান কমিশনের প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আপনারা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

চিঠিতে আরও বলা হয়, যদিও আপনাদের এমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কৌশলের বিষয়ে কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই। আপনাদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হলেও কমিশন মনে করে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক না হোক, অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা বা মতবিনিময় হতে পারে। আপনাদের ইসিতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সদয় সম্মত হলে আলোচনা করে দিনক্ষণ নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রত্যুত্তর প্রত্যাশা করছি। সিইসি এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক উত্তর পাঠায়নি বিএনপি।