দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সাংবাদিক সমাজের অভিভাবক ও জাতীয় মুরব্বি এবিএম মূসার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছেন।

শোক প্রকাশ করেছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ১৮ দলীয় জোটনেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী।

এ ছাড়া বাংলা একাডেমি, জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন শোক প্রকাশ করে।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, নৌমন্ত্রী শাজাহান খান পৃথক পৃথক শোকবাণী দিয়েছেন।

শোকবাণীতে বলা হয়েছে, দেশবরেণ্য জাতীয় এ মুরব্বির ৮৩ বছরের জীবনে ৬০ বছরই কেটেছে সাংবাদিকতা পেশায়। এ ছাড়া তার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। দক্ষতা ও সাহসের পরিচয় দিয়েছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে। শাসক শ্রেণীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সাংবাদিকতার নীতি ও আদর্শকে রেখেছেন সমুন্নত। শেষ জীবনেও সত্য কথা বলে অপরিসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে গেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রবীণ সাংবাদিক ও বাংলাদেশের প্রথম সংসদের সংসদ সদস্য এবিএম মূসার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এবিএম মুসার মৃত্যুর খবরে আমি দারুণভাবে মর্মাহত হয়েছি। তিনি বাংলাদেশের সাংবাদিকতার দিকপাল। তার মৃত্যু শুধু সাংবাদিক সমাজ নয়, পুরো জাতিকে দারুণভাবে ব্যথিত করেছে।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘মরহুম মূসা সাহেব ছিলেন এ দেশের বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার প্রবাদপুরুষ। জাতির যে কোন সঙ্কটে মূসা সাহেব তার লেখনীর মাধ্যমে পুরো জাতিকে এক কাতারে নিয়ে আসতেন। ওনার এমন মৃত্যুর ক্ষতি অপূরণীয়।

দেশবরেণ্য সাংবাদিক ও প্রতিথযশা কলামিস্ট এবিএম মূসার মৃত্যুতে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তার মৃতুতে উপমহাদেশের সাংবাদিকতা জগতের একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন হলো। শুধু বাংলাদেশ নয়, এই উপমহাদেশের সকল মানুষ তার অন্তর্ধানে ব্যথিত। তাকে হারানোর মধ্য দিয়ে জাতি আজ একজন অভিভাবক হারালো।

ড. ইউনুস বলেন, এবিএম মূসা শুধু একজন সাংবাদিকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন সত্য, ন্যায় ও আদর্শের প্রতীক। তিনি অকুতোভয় সাংবাদিক ছিলেন। শক্তিধরের রক্তচক্ষুকে তিনি কখনও ভয় পাননি। সাংবাদিকতার মাধ্যমে কত সহজে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছা যায় সেই দৃষ্টান্ত এবিএম মূসা আমাদের মাঝে স্থাপন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, জাতির এই দুর্দিনে তাকে হারিয়ে আমরা সবাই অসহায় বোধ করছি। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

বাংলা একাডেমি শোকবাণীতে জানায়, এবিএম মূসা বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে এক স্মরণীয় নাম। শুধু দায়বদ্ধ-আধুনিক সাংবাদিকতাই নয়, দেশে ও বিদেশে সাংবাদিক-সংগঠক হিসেবেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বিবিসি, সানডে টাইমস প্রভৃতি খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সংবাদদাতা হিসেবে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নেতৃবৃন্দ সংগঠনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক এবিএম মূসার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। নেতৃবৃন্দ শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।

(দ্য রিপোর্ট/এআই/এমএআর/আরকে/এপ্রিল ০৯, ২০১৪)