জোসনা জামান, দিরিপোর্ট : নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কারণে আটকে গেল ১৪ উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন। মঙ্গলবার সকালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক। চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করার পর তা বাতিল করা হয়েছে।

একনেকে অনুমোদনের জন্য নির্ধারিত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা, এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩ হাজার ২১২ কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় এ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্ব করার কথা ছিল। এ বিষয়ে পরিকল্পনা সচিব ভূইয়া শফিকুল ইসলাম দিরিপোর্টকে বলেন তফসিল ঘোষণার কারণেই একনেক বৈঠকটি বাতিল করা হয়েছে। আমরা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছিলাম। কারণ যে প্রকল্পগুলো নির্ধারিত ছিল সেগুলো জনগুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনুমোদন পিছিয়ে যাওয়ায় বাস্তবায়নও কিছুটা বাঁধাগ্রস্ত হবে, কিন্তু তা সাময়িক। অনুমোদন আটকে যাওযার কারণে কোন সমস্যা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলম বলেন, বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কিছুটা বিলম্ব হবে। কিন্তু এটি মেনে নিতেই হবে। কেননা সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন এ সরকার একনেকের বৈঠক করতে পারবে না। পরবর্তীতে নতুন সরকার এসে অনুমোদন দেবে।

মঙ্গলবার একনেকে নতুন সদস্য হিসেবে যাদের যোগ দেওয়ার কথা ছিল তারা হলেন, সর্বদলীয় সরকারের ভূমি এবং দুর্যোগ ববস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী বেগম রওশন এরশাদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

অনুমোদন আটকে যাওয়া প্রকল্পগুলো হচ্ছে- শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১০০টি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল (টিএস) স্থাপন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হযেছিল ৯২৪ কোটি টাকা। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ইনোভেটিভ ম্যানেজমেন্ট অফ রির্সোসেস ফর পভারটি এ্যালিভিয়েশন থ্রো কমপ্রিহেনসিভ টেকনোলজি, এর ব্যয় ৩৮ কোটি টাকা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা অঙ্গ, কৃষি উৎপাদন ও কর্মসংস্থান কর্মসূচি, এর ব্যয় ৪৩২ কোটি টাকা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কনস্ট্রাকশন অফ স্মল ব্রিজ/কালভার্ট এট চিটাগাং হিলট্যাকস রিজিওন, এর ব্যয় ১৩৩ কোটি টাকা। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ রেলওয়ে সংস্কার (১ম সংশোধিত), এর ব্যয় ৩১৫ কোটি টাকা। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ রেলওয়ে খুলনা রেলওয়ে ষ্টেশন ও ইয়ার্ড রিমডেলিং এবং বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনের অপারেশনাল সুবিধাদির উন্নয়ন (১ম সংশোধিত), এর ব্যয় ৭৬ কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার বিভাগের মিউনিসিপ্যাল গভর্ন্যান্স এন্ড সার্ভিসেস প্রকল্প, এর ব্যয় ২ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার বিভাগের ৩৭টি জেলা শহরে পানি সরবরাহ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, এর ব্যয় ৭৫৪ কোটি টাকা, সড়ক বিভাগের মধুমতি নদীর উপর কালনা সেতু নির্মাণ, এর ব্যয় ২৪৫ কোটি টাকা। সড়ক বিভাগের কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-চামড়াঘাট-মিঠামইন সড়ক উন্নয়ন, এর ব্যয় ৮৯ কোটি টাকা। সড়ক বিভাগের পত্নীতলা-সাপাহার-রহনপুর সড়ক উন্নয়ন, এর ব্যয় ১২৮ কোটি টাকা। সড়ক বিভাগের কানসাট-রহনপুর-ভোলাহাট সড়ক উন্নয়ন, এর ব্যয় ৩৩ কোটি টাকা। সড়ক বিভাগের মির্জাপুর (গড়াই) সখিপুর সড়ক উন্নয়ন, এর ব্যয় ৩৬ কোটি টাকা। সড়ক বিভাগের শহীদ মনসুর আলী (পিপুলবাড়ীয়া-সোনামুখী-ধুনট) সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ৫৩ কোটি টাকা।

(দিরিপোর্ট/জেজে/জেএম/নভেম্বর ২৬, ২০১৩)