আমজাদ হোসেন, দ্য রিপোর্ট : জনস্বার্থে শুক্রবার তফসিলি ব্যাংকগুলোর সব শাখা খোলা রাখায় পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন ৩২ হাজার পরীক্ষার্থী ব্যাংক কর্মকর্তা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৃহস্পতিবার এক সার্কুলারের মাধ্যমে জনস্বার্থে শুক্রবার তফসিলি ব্যাংকগুলোর সব শাখা খোলা রাখার নির্দেশ দেয়।

অন্যদিকে পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্তে শুক্রবার পরীক্ষা নেওয়ার জন্য অটল থাকে ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ(আইবিবি)। বৃহস্পতিবার আইবিবির মহাসচিব স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পূর্বঘোষিত সময়সূচি মোতাবেক যথারীতি ডিপ্লোমা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। চলতি মেয়াদে ৩২ হাজার ব্যাংক কর্মকর্তা আইবিবির পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন বলে জানা গেছে।

আইবিবির মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ গোলাম হায়দার এ প্রসঙ্গে বলেন, ঘোষিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো পথ ছিল না। দিনের শেষভাগে ব্যাংক চালু রাখার বিষয়টি জানতে পারি। পরীক্ষার জন্য আমাদের সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন ছিল। ফলে সরে আসা কঠিন হয়।

পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির বিষয়ে গোলাম হায়দার বলেন, সব পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ না করলেও উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মাহফুজুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, গ্রাহকস্বার্থ বিবেচনায় সব ব্যাংকের শাখা শুক্রবার খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এতে অন্য কোনো বিষয় বিবেচনায় রাখা হয়নি। আইবিবি স্বতন্ত্র একটি প্রতিষ্ঠান। তারা তাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সোনালী ব্যাংকের এক পরীক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ১ হাজার টাকা দিয়ে পরীক্ষার নিবন্ধন করেছি। অথচ পরীক্ষা দিতে পারছি না । ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চেয়ে পাওয়া যায়নি। আর পরীক্ষা না দিতে পারায় আমি আরও ছয় মাস পিছিয়ে পড়েছি।

অন্যদিকে রুপালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইবিবির মধ্যে এই বিষয়ে কোনো আলোচনা না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যার বলি হতে হয়েছে আমাদের।

একই ব্যাংকের আরেক পরীক্ষার্থী বলেন, এই পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে আমাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়। আজ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় পিছিয়ে পড়লাম।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, এই কথা আপনাকে বলে কোন লাভ নেই। ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। এতদিনের পড়ালেখা বিফলে গেল।

পরীক্ষার্থীদের ছুটি না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাউথ-ইস্ট ব্যাংকের অ্যাসিটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট খন্দকার আনামুল হক বলেন, অবরোধের কারণে গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেন খুবই কম ছিল। গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে আমরা অনেককেই ছুটি দিতে পারি নাই।

অন্যদিকে রুপালী ব্যাংকের নোয়াখালীর বামনি শাখার ব্যবস্থাপক জয়নাল আবেদীন বলেন, ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ব্যাংক চালু রেখেছি। গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে পরীক্ষার্থীদের আমরা ছুটি দিতে পারি নাই।

(দ্য রিপোর্ট/এএইচ/এইচএসএম/ডিসেম্বর ০৬, ২০১৩)