দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ১১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার দামাল ছেলেরা হানাদার মুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার কুষ্টিয়া জেলাকে। ফলে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পাঁচ দিন আগেই কুষ্টিয়ার মানুষ পায় বিজয়ের স্বাদ।

স্বজনদের গলিত লাশ, কঙ্কাল, গণকবর আর সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের আর্তনাদ ভুলে সেদিন বিজয়ের আনন্দে রাস্তায় নেমে উল্লাস করেছিল জেলার সর্বস্তরের মানুষ।

মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই পাক হানাদার বাহিনী কুষ্টিয়ায় চরম প্রতিরোধের মুখে পড়ে। ৩০ মার্চ ভোররাতে মুক্তিবাহিনী কুষ্টিয়া জেলা স্কুলে পাক হানাদার ক্যাম্পে চারদিক থেকে হামলা করে। সারাদিন চলে যুদ্ধ। অনেক পাক সেনা নিহত হয়। প্রতিরোধ যুদ্ধের মুখে ১ এপ্রিল রাতে পাক বাহিনী কুষ্টিয়া ছেড়ে পালিয়ে যায়। প্রথমবারের মতো শত্রু মুক্ত হয় কুষ্টিয়া।

এরপর, দফায় দফায় বিমান হামলা চালিয়ে ১৬ দিন পর আবার কুষ্টিয়া দখল করে নেয় পাক বাহিনী।

মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তি বাহিনীর তুমুল লড়াই চলে। কুষ্টিয়া জেলাতেই পাকবাহিনী ৬০ হাজার মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার পর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী যৌথ আক্রমণে একের পর এক বৃহত্তর কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকা হানাদার মুক্ত হতে থাকে। ৯ ডিসেম্বরে কুষ্টিয়া শহর ছাড়া সমস্ত এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। ৯ ডিসেম্বর থেকে কুষ্টিয়া শহর মুক্ত করতে শুরু হয় তুমুল লড়াই। এ যুদ্ধে উভয় পক্ষের অনেকে নিহত হয়। ১১ ডিসেম্বর আসে চূড়ান্ত বিজয়।

এ বছর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে বুধবার সকালে কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও পুষ্পমাল্য অর্পণ করে দিনব্যাপী কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন। এ সময় পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহমেদ, প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/ ডিডি/ কেএন/ রা/এমডি/ ডিসেম্বর ১১, ২০১৩)