সৌরভ রায়, দিরিপোর্ট২৪ : টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন রাজধানী ঢাকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। শনিবার বিভিন্ন মার্কেটে হরতালের আগাম প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। বিক্রেতারা দোকান খুলে বসে আছেন, কিন্তু ক্রেতার দেখা নেই। মার্কেটের দোকানিরা জানান, টানা হরতালকে ঘিরে জনমনে এরই মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মূল কমপ্লেক্সের ভেতরে দোকান আছে ৫০০টি। আর এর চারপাশে অস্থায়ী দোকানের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজারের মত। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ কোটি টাকার কেনাবেচা হয়ে থাকে এসব দোকানে। হরতালে মার্কেট বন্ধ থাকায় এই দৈনিক আয় থেকে বঞ্চিত হন ব্যবসায়ীরা। সঙ্গে অনিশ্চিয়তা ভর করেছে সংশ্লিষ্ট প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার পরিবারেও।

“দোকানে দিনে খরচ ১১ হাজার টাকা। এক টাকা আয় না হলেও নিজের পকেট থেকে এই টাকা দিতে হয়। হরতালের দিন তো মার্কেট বন্ধই। কিন্তু আগের দিনও কাস্টমাররা ভয়ে আসে না।”-এ কথাগুলো বললেন নিউমার্কেটের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান। ওই মার্কেটে শনিবার দুপুরে হরতাল প্রসঙ্গে আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। ক্রেতা মো. সুমন বলেন, “ভয়ের কিছু নেই। বিন্তু বলাও যায় না, যখন তখন যেকোনো কিছু হয়ে যেতেও পারে। এজন্যই বোধহয় আজকে মানুষ কম।”

নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর নিজের হতাশার কথা জানালেন এভাবে, “হরতালে আমাদের বিশাল ক্ষতি হয়। বেচাকেনা বন্ধ থাকায় ব্যবসায় স্থবিরতা নেমে আসে। অবিবেচকের মতো লাগাতার হরতাল দেওয়া কারোরই উচিত না। এখানে অনেকে আছে যাদের ঘরে তিন দিনের খাবার মজুদ নেই। সুতরাং তিনদিন কাজ বন্ধ থাকলে তারা খাবে কী?”

নিউমার্কেটের মত নীলক্ষেতের বই দোকানিরাও টানা হরতাল নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে। ইসলামিয়া বণিক বহুমূখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আলী আক্কাস বলেন, “আমাদের মার্কেটে চার শতাধিক দোকান। এর সঙ্গে প্রায় ২ হাজার পরিবারের জীবন-জীবিকা জড়িত। কাছাকাছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকায় কিছু বেচাকেনাও হয়। তবে টানা হরতাল থাকলে খুব একটা কাস্টমার পাওয়া যায় না। ফলে আশানুরূপ বিক্রি হয় না।”

(দিরিপোর্ট২৪/এসআর/এইচএস/এইচএসএম/অক্টোবর ২৬, ২০১৩)