‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচি সফলের মাধ্যমে বিএনপি সরকারকে জানান দিতে চায় দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ একতরফা নির্বাচন চায় না। বিরোধী দলের দাবির সঙ্গে দেশের জনগণ একাত্ম্।

পাশাপাশি নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠায় ক্ষমতাসীনদের চাপে রেখেই দাবি আদায় করতে চায় বিএনপি। সরকারের সকল বাধা উপেক্ষা করে রবিবারের কর্মসূচি সফল করতে চায় তারা। ওইদিন অবস্থা বিবেচনা করেই পরবর্তী পদক্ষেপের কথা ভাবছে বিরোধী দল।

এ ব্যাপারে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সমর্থন নেই। এটা প্রমাণ করা হবে মার্চ ফর ডেমোক্রেসির মাধ্যমে।

দাবি আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করলেও সরকারের এতটুকু টনক নড়েনি। ফলে ৫ জানুয়ারি নির্বাচন ঠেকাতে জনগণকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ নামক কর্মসূচির ঘোষণা করেন।

এক ভিডিও বার্তায় শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দলীয় নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচিতে সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে অংশ নেওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমি যদি কোনো কারণে কর্মসূচিতে অংশ নিতে না পারি, আপনারা সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় যোগদান করবেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ‘গণজমায়েতের একদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করলেও পরিস্থিতে বুঝে নয়াপল্টনে বিএনপি অফিস অথবা অন্যকোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টানা অবস্থান কর্মসূচির সিদ্ধান্ত আসতে পারে। সেটা নির্বাচনের দিন পর্যন্ত হতে পারে। এ ছাড়া অসহযোগ আন্দোলন ও গণকারফিউর মতো কঠোর কর্মসূচি পরিকল্পনায় আছে দলটির। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।

অবস্থান কর্মসূচি সম্পর্কে জানাতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘অবস্থানের প্রশ্নই আসে না, দেশনেত্রী (খালেদা জিয়া) বলেছেন, কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। সভা-সমাবেশ গণতান্ত্রিক অধিকার। মানুষ কি বলতে চায় তার জন্য সরকারকে সুযোগ করে দিতে হবে।

কর্মসূচি ঘোষণার পর দুইদিন খালেদা জিয়া কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সাংবাদিকসহ অন্যান্য পেশাজীবী নেতাদের সঙ্গেও তিনি মতবিনিময় করেছেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা প্রস্তুতি নিন, যতই বাধা আসুক আমি রাজপথে নামবই।’

কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ও কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি নেতাদের। অনেকে অফিসের সামনে থেকে ফিরে এসেছেন। এ দুই স্থানে ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তার কারণে গুঞ্জণ উঠেছে, খালেদা জিয়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে।

২৯ ডিসেম্বর কর্মসূচির প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যলে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান দ্য রিপোর্টকে বলেন, মার্চ ফর ডেমোক্রেসি সফল করতে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। সহিংসতা চাইলে সরকার বাধা দেবে, আর যদি সহিংসতা না চায় তাহলে সরকারের সহযোগিতা করা উচিৎ।

জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান দ্য রিপোর্টকে বলেন, সরকার আমাদের মার্চ ফর ডেমোক্রেসিতে বাধা দিয়ে সংহিসতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যদি এমন কোনো পরিস্থিতির তৈরি হয় তাহলে আমরা ভিন্ন কর্মসূচির দিকে যাবো। যেখানেই বাধা সেখানেই প্রতিরোধ। যদি কোনো অশান্তি সৃষ্টি হয়, এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।

১৮ দল গণজমায়েতের মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের মতো অবস্থান কর্মসূচিতে যাচ্ছে কি না এ প্রসঙ্গে প্রধান বলেন, ‘না’। হেফাজতে ইসলাম কোনো রাজনৈতিক দল নয়।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/এসবি/নূরুল/ডিসেম্বর ২৭, ২০১৩)