দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঘোষিত ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’র অংশ হিসেবে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা যে কোনো মূল্যে সফল করতে নেতাকর্মীরা প্রস্তুত। পুলিশী বাধা অতিক্রম করে বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোট প্রধান নয়াপল্টনে আসলেই নেতাকর্মীরা যে কোনো বাধা উপেক্ষা করে সেখানে উপস্থিত হবেন। দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে দ্য রিপোর্ট এ তথ্য জানতে পেরেছে।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নয়াপল্টন যাওয়ার উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় দিনের মতো সেমাবারও চেষ্টা করবেন। সোমবার বেলা ৩টার মধ্যে যে কোনো সময় তিনি পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে বাসা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানা গেছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেছেন, ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচি সফল করতে শুধু বিএনপি বা ১৮ দলীয় জোট নয়, দেশের লাখ লাখ সাধারণ মানুষ প্রস্তুত। সরকার আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে অগণতান্ত্রিক আচরণ করছে। দেশের কোনো অঞ্চল থেকেই লোকজনকে ঢাকা আসতে দেয়নি। গণতন্ত্র বাঁচাতে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাজারো ভোগান্তি সয়ে ইতোমধ্যেই ঢাকা এসেছেন। এখনও অনেকে আসছেন।’

আজম বলেন, ‘যত বাধাই দেওয়া হোক, আমাদের চেয়ারপারসন নয়াপল্টনে আসবেনই। তিনি আসলেই লাখ লাখ জনতা রাস্তায় নেমে এসে তাকে স্বাগত জানাবে। এ স্বৈরাচারি হাসিনার একদলীয় সরকারের পতন ঘটাবে।’

জানা গেছে, শত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা কর্মসূচি ঘোষণার পর পরই ঢাকা এসে পৌঁছেছেন। গত কয়েকদিন ধরে তারা অনেক ভোগান্তি সহ্য করে রাজধানী ও রাজধানীর আশপাশে অপেক্ষা করছেন। বিএনপির দাবি, ঢাকায় অবস্থান করা নেতাকর্মীদের সংখ্যা হবে কয়েক লাখ। তাদের অপেক্ষা-কোন সময় খালেদা জিয়া পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে নয়াপল্টনে পৌঁছবেন। তার যাওয়ার সংবাদ গণমাধ্যমে ও দলীয় সূত্রে জানতে পারলেই স্বল্প সময়ের মধ্যে নেতাকর্মীরা মাঠে নেমে পড়বেন।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের হামলা-বাধা সত্ত্বেও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন নয়াপল্টনে যাওয়ার জন্য এখনও প্রস্তুত। তারা অপেক্ষা করছেন কখন বিরোধীদলীয় নেত্রী নয়াপল্টনে আসেন। তার আসার সংবাদ জানা মাত্রই এসব সংগঠন ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে নয়াপল্টন হাজির হবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পেশাজীবী নেতা অধ্যাপক ইস্রাফিল রতন দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে সব সময়ই প্রস্তুত। ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) ব্যারিকেড ভেঙে বাসা থেকে বের হলেই আমরা মিছিল নিয়ে গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় শরিক হব।’

রতন বলেন, ‘আমরা রবিবারও মিছিল নিয়ে গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় শরিক হতে যাত্রা করেছিলাম। কিন্তু সরকারের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশ আমাদের ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তায় আটকিয়ে দেয়। আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানাচ্ছিলাম। কিন্তু পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা শিক্ষকদের ওপর নৃশংসভাবে হামলা চালায়। এরপরও আমরা দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় গণতন্ত্রের অভিযাত্রার জন্য অপেক্ষায় রয়েছি।’

জানা গেছে, বিএনপিসহ দলটির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনগুলোও নয়াপল্টনের অভিযাত্রার জন্য বাধা সত্ত্বেও নানা প্রস্তুতি নিয়ে রয়েছে। এখন প্রকাশ্যে তারা না আসলেও পুলিশের বিভিন্ন হয়রানির মুখেও ঢাকাতে লুকিয়ে আছেন। নির্দেশ পেলেই দ্রুত মাঠে নেমে আসবে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা সফল করতে যুবদল প্রস্তুত। শুধু ম্যাডামের অপেক্ষায় রয়েছি আমরা।’

তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী ঘোষিত কর্মসূচি সফল করতে মহানগর যুবদলকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। ঢাকার বাইরে থেকে যেসব নেতাকর্মী এসেছেন, তাদের সবল প্রকার সহযোগিতা করতে এখানকার নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে ‘মার্চ’ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

আলাল আরও বলেন, ‘যে কোনো বাধা প্রতিরোধ করে যুবদলের নেতাকর্মীরা কর্মসূচি সফল করতে প্রস্তুত রয়েছে। আশাকরি এ অবৈধ সরকার বিরোধী দলের সঙ্গে গণতান্ত্রিক আচরণ করবে।’

ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক নাসির দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রার জন্য ছাত্রদল প্রস্তুত। ম্যাডাম বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হাজার হাজার ছাত্রদল নেতাকর্মী রাজপথে নেমে আসবে।’

(দ্য রিপোর্ট/টিএস-এমএইচ/এনডিএস/লতিফ/ডিসেম্বর ৩০,২০১৩)