thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২২ জমাদিউল আউয়াল 1446

ডেসটিনির ২ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পেশ

২০১৪ জানুয়ারি ০৬ ১৬:৩৫:০৬
ডেসটিনির ২ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পেশ

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি ডেসটিনির বিরুদ্ধে করা দুটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনের সংশ্লিষ্ট শাখায় দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানকারী দল।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে তদন্ত দল সোমবার বিকেলে বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত-১ শাখার পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানের কাছে ওই তদন্ত প্রতিবেদন দুটি দাখিল করে।

দুদক সূত্র জানায়, মোট চার হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ ৩৮২ টাকা আত্মসাতের দায়ে ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদ ও ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনসহ গ্রুপের শীর্ষ অর্ধশতাধিক কর্মকর্তাকে চূড়ান্তভাবে আসামি করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, ডেসটিনির বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় দায়েরকৃত ৩৩ নম্বর মামলায় মোট ৪৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ মামলায় অর্থ আত্মসাতের পরিমাণ এক হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ ২৩ হাজার ১৫৫ টাকা। অপরদিকে কলাবাগান থানায় দায়েরকৃত ৩২ নম্বর মামলায় ১৭ জনকে আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ মামলায় অর্থ আত্মসাতের পরিমাণ দুই হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার ২২৭ টাকা। এ সব মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ওই অর্থ স্থানান্তর করার দায়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ডেসটিনির দুটি মামলার তদন্তকালে সমবায় অধিদফতরের ১১ জন কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের (ডিএমসিএসএল) মামলায় আসামিরা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত সাড়ে আট লাখেরও বেশি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এ সময় ঋণ প্রদান, অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ, নতুন প্রতিষ্ঠান খোলার নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। যা পরবর্তী সময়ে আসামিরা লভ্যাংশ, সম্মানী ও বেতন-ভাতার নামে সরিয়ে নিয়েছেন।

অপরদিকে ২০০৬ সালের ২১ মার্চ থেকে ২০০৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে গাছ বিক্রির নামে ডেসটিনি ট্রি-প্লান্টেশন লিমিটেডের (ডিটিপিএল) জন্য দুই হাজার কোটিরও বেশি টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। যা পরবর্তী সময়ে অসামিরা বেতন-ভাতা, সম্মানী, লভ্যাংশ, বিশেষ ভাতা বা কমিশনের আকারে আত্মসাৎ করেছেন।

২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় দুদক ওই দুটি মামলা দায়ের করে। ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশনে প্রতারণার অভিযোগে ১২ জনের বিরুদ্ধে ৩২ নম্বর মামলা এবং ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২২ জনের বিরুদ্ধে ৩৩ নম্বর মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ১২ জন উভয় মামলায় আসামি হিসেবে রয়েছেন।

ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন ও পরিচালক লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম বর্তমানে দুদকের মামলায় কারাগারে রয়েছেন। অর্থ পাচারে সহায়তাকারী ইসলামী ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের মালিক মো. শফিউল ইসলামও কারাগারে রয়েছেন। এ ছাড়া ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট লে. জেনারেল (অব.) এম হারুন-অর-রশিদ আদালতের শর্তসাপেক্ষে জামিনে আছেন।

প্রসঙ্গত, ডেসটিনির শীর্ষ তিন কর্মকর্তা রফিকুল আমীন, মোহাম্মদ হোসেইন ও দিদারুল আলম এরই মধ্যে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

ডেসটিনির দুর্নীতি অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের একটি দল গঠন করে কমিশন। এ দলের সদস্যরা হলেন- দুদকের উপ-পরিচালক বেনজীর আহম্মদ, মাহমুদ হাসান, এসএমএম আখতার হামিদ ভূঁঞা, মো. মোজাহার আলী সরদার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম।

(দ্য রিপোর্ট/এইচবিএস/এসকে/ এনআই/জানুয়ারি ০৬, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর