thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ৫ মে 24, ২২ বৈশাখ ১৪৩১,  ২৬ শাওয়াল 1445

১২ জানুয়ারি সরকার গঠনের ঘোষণা

২০১৪ জানুয়ারি ১০ ১৭:৩৪:০১
১২ জানুয়ারি সরকার গঠনের ঘোষণা

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : আগামী ১২ জানুয়ারি সরকার গঠন করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সংসদ নেতা নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রপতির আহ্বানের পর আগামী ১২ জানুয়ারি সরকার গঠন করা হবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আলোর পথে যাত্রা শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশে করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছেন, ব্যর্থ হয়েছেন। এখন এটা বন্ধ করেন। বন্ধ না করলে কিভাবে কী করতে হয় তা আওয়ামী লীগের জানা আছে। বাংলাদেশের মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার জন্য যত কঠোর হওয়া দরকার তত কঠোর হব।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়েছে। বাংলাদেশ আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছে। কয়েকটা যুদ্ধাপরাধীকে নিয়ে তিনি এ যাত্রা বন্ধ করতে পারবেন না। আবারো আহ্বান জানাচ্ছি, কোনো কথা থাকলে আসুন আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করি।

তিনি বলেন, নির্বাচনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে। তাদের অপরাধ তারা নৌকায় ভোট দিয়েছে। বাংলার মানুষ ভোট দিয়ে দেশের উন্নয়ন করতে চায়। ২০০১ সালেও একই কাজ করেছেন তারা। তখন আমরা বিরোধী দলে ছিলাম কিছুই করতে পারিনি। এখন আমরা সরকারে। যৌথবাহিনী দিয়ে অভিযান শুরু করেছি। প্রয়োজনে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেব।

বিএনপি নেত্রীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের মনের জ্বালায় মানুষকে জ্বালাবেন না।

নির্বাচনে না আসার জন্য বিএনপি নেত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। কারণ জামায়াত নির্বাচনে আসেনি, তাদেরকে ভোট দিতে হয়নি। বিএনপিকে ধন্যবাদ, জামায়াত আসেনি তাই বিএনপিও নির্বাচনে আসেননি।

শেখ হাসিনা বলেন, ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য আমরা বৃত্তির ব্যবস্থা করবো। ইতিমধ্যে অনেক ছাত্রছাত্রীকে বৃত্তি দিয়েছি। ৩০ কোটি বই বিএনপির হরতাল-অবরোধ সত্ত্বেও পৌঁছে দিয়েছি। প্রায় ৩১ কোটি বই ছাপিয়েছি। আগামীতে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করবো।

তিনি বলেন, এবার আমরা নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছি, বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবো। বিশ্ব সভায় বাংলাদেশ একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে মর্যাদা পাবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলার জনগণের প্রতি। তারা বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। নির্বাচন কমিশন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত সকলকে আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সকল ষড়যন্ত্র মাড়িয়ে বাংলাদেশের মানুষ প্রমাণ করেছে, তারা শান্তি চায়, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে চায়। এ জন্য আমাদের নির্বাচিত করেছে।

তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে শুয়ে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমাদের জন্ম গোপালগঞ্জে। তিনি সেই গোপালগঞ্জ সইতে পারেন না। আপনারা শুনেছেন তিনি গোপালগঞ্জ নিয়ে কী কটূক্তি করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যখন আমি আলোচনা আহ্বান করি, তখন তিনি আল্টিমেটাম দেন। ২০০৬ সালে তিনি বলেছেন, ১০০ বছরের মধ্যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে না। আমি নাকি প্রধানমন্ত্রী কেন বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবো না। কিন্তু তার বদদোয়া আওয়ামী লীগের জন্য না লাগলেও তার ও তার দলের জন্য লেগে যায়।

তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে দুর্নীতি বন্ধ করি। স্বাক্ষরতার হার ৭১ এ নিয়ে যাই। বাংলাদেশের জনগণের শান্তি এলেও একজনের মনে শান্তি ছিল না। আপনারা বলতে পারেন, তিনি কে? বিএনপি নেত্রী। তার মনে শান্তি আসেনি। ক্ষমতায় এসে তিনি শুরু করেন খুন-খারাবি। এখন আবার আন্দোলনের নামে বোমা মেরে মানুষ হত্যা শুরু করেছেন। তার হাত থেকে গরুও রেহাই পায়নি।

আওয়ামী লীগ নেত্রী বলেন, পাকিস্তানী রাজাকারদের পুনর্বাসন করে রক্ত দিয়ে আনা স্বাধীনতার চেতনাকে ধ্বংস করেছে জেনারেল জিয়া। বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতেও দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে। আওয়ামী লীগ সুসংগঠিত দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বসভায় পরিচিত হয়। দুর্ভাগ্য, এরপরও বিভিন্ন সময় আঘাত সইতে হয়েছে আমাদের। নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য শিশুকেও গণধর্ষণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের যে কর্মসূচি দিয়েছিলেন সেটা বাস্তবায়ন হলে আমাদের পেছনে ফিরে তাকাতে হত না। দুর্ভাগ্য বাংলার জনগণের। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে তার কর্মসূচি সফল হতে দেয় নাই ঘাতকেরা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভায় আরো বক্তব্যে দেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/এইউএ/এসবি/জানুয়ারি ১০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর