thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১,  ২৪ জমাদিউস সানি 1446

আখাউড়ায় দিনে প্রায় কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি!

২০১৪ জানুয়ারি ১০ ১৭:৫৭:৫৬
আখাউড়ায় দিনে প্রায় কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা : হরতাল-অবরোধ ও আগরতলার ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটে অচলাবস্থা বিরাজ করছে আখাউড়া স্থলবন্দরে। এ কারণে বন্দরের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি ব্যবসায়ী ও ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা কর্মহীন হয়ে পড়ছে।

রফতানি পণ্যের কোটি কোটি টাকার বিল ওপারের ব্যবসায়ীদের কাছে আটকে আছে। হরতাল ও অবরোধের দিনগুলোতে প্রায় ৪ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

সরেজমিন আখাউড়া স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, যেখানে প্রতিদিন হাজারো মানুষের কোলাহল থাকতো সেখানে এখন ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে। পুরো রাস্তা ফাঁকা। ব্যবসায়ীদের অফিস, দোকানপাট সবই বন্ধ। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস, ইমিগ্রেশন অফিস ছিল খোলা থাকলেও অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অলস সময় পার করছেন।

জানা গেছে, আখাউড়া স্থলবন্দরে অচলাবস্থা চলার পাশাপাশি ত্রিপুরার ব্যবসায়ী সমিতি আগরতলা স্থলবন্দরে ইন্টিগ্রেটেডে চেকপোস্টে মালপত্র লোড-আনলোডসহ বিভিন্ন চার্জ বাড়ানোর প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের আমদানি-রফতানি বন্ধ রাখে। এই দুই মিলে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে।

এর আগে ২০১৩ সালের জুলাই মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রূপীর দর পতনের কারণে প্রায় ৩ মাস এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি প্রায় বন্ধই ছিল। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে কিছুটা স্বাভাবিক হলেও আবার অচলাবস্থা শুরু হয়।

একদিন আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলে সরকার প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে দেশ বঞ্চিত হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। তা ছাড়া যাত্রী পারাপার কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। যাত্রী পারাপারের খাত থেকেও হরতাল ও অবরোধের কারণে রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার।

দ্য রিপোর্টকে আখাউড়া স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনের এসআই তোফায়েল আহাম্মদ জানান, হরতাল-অবরোধের কারণে যাত্রী পারাপার কমে গেছে। দূরের যাত্রীরা আসছে না। দেশের একমাত্র ৯৯ ভাগ রফতানিমুখী স্থলবন্দর এটি।

এ বন্দর দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সেভেন সিস্টার খ্যাত ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়, মিজরাম, মনিপুর, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল রাজ্যে প্রায় ৪০টি পণ্য রফতানি হয়। প্রতিবছর এ সব পণ্য রফতানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

তিনি আরও জানান, প্রায় ৩২৭ কোটি ৫৯ লাখ ১০ হাজার টাকা দেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছিল ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে। কিন্তু এ অর্থবছরে তা সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি।

আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী আব্বাস উদ্দিন ভূঁইয়া দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘হরতাল-অবরোধের কারণে আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে। কিছুদিন আগে ভারতে রূপির দর পতনের কারণে কয়েক মাস ব্যবসা মন্দা গেছে। এখন দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আমরা এখন পথে বসা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’

দ্য রিপোর্টকে ভূঁইয়া ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শাহাদাত হোসেন লিটন বলেন, ‘ব্যাংক চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের রফতানি করা বিভিন্ন পণ্য ত্রিপুরায় রফতানি করে আসছে। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ওপারের ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য আমদানি-রফতানি বন্ধ রাখায় আমরা অনেক সমস্যার মধ্যে আছি। এ কারণে ওপারের ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো বিল দিচ্ছে না। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে আমার মতো অনেকেরই কোটি কোটি টাকা আটকে আছে।’

বন্দরের আরেক ব্যবসায়ী আল-আমিন খন্দকার দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘ত্রিপুরার ব্যবসায়ীরা আমাদের জানিয়েছেন, অতিরিক্ত খরচ বহন করে পণ্য আমদানি করে লোকশান দিতে হচ্ছে। এ কারণে তারা এখন মালামাল নেবে না।’

(দ্য রিপোর্ট/এসকে/এমএইচও/এনডিএস/ এনআই/জানুয়ারি ১০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর