thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ১৮ জমাদিউল আউয়াল 1446

‘কখনোই ভাবিনি এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলব’

২০১৪ জানুয়ারি ১৪ ১৩:১০:১০
‘কখনোই ভাবিনি এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলব’

আদিত্য রুপু, দ্য রিপোর্ট : ‘ইয়ারিয়া’র পরিচালক দিব্যা খোসলা কুমারের বলিউড সংশ্লিষ্টতা দীর্ঘদিনের। প্রথমে তিনি সালমান খানের বিপরীতে একটি মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রে তার প্রথম অভিনয় অক্ষয় কুমার, ববি দেওল ও অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে। তবে, রুপোলি পর্দার জীবনের বাইরে ছকবাধা নিয়মে ব্যাপক পরিবর্তন আসে প্রযোজনা সংস্থা ‘টি-সিরিজে’র কর্ণধার হাঞ্চো ভূষন কুমারকে বিয়ে করে। গত ১০ জানুয়ারি দিব্যা খোসলা কুমারের পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্র ‘ইয়ারিয়া’ মুক্তি পায় বলিউডে। তারুণ্য নির্ভর কাহিনীর এই চলচ্চিত্রের দর্শক উপস্থিতিও ভালো। ছবিটির সঙ্গীত, অভিনয়শিল্পী, গল্প সবই তরুণদের কাছে এখন আলোচনার বিষয়। দিব্যা ও তার পরিচালনা নিয়েও আলোচনা কম হচ্ছে না। বি-টাউনের এই নারী নির্মাতাকে নিয়ে টিন-টাউনের প্রতিক্রিয়া দেখার মতো। দিব্যাকে নিয়ে বিশেষ করে তরুণদের আলোচনা ও আগ্রহ দুটোই ‘মাঠ ছাপিয়ে জল ঘরে ঢুকে পড়া’র মতো অবস্থা। সম্প্রতি অনলাইন পোর্টাল বলিউড লাইফকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দিব্যা ‘ইয়ারিয়া’ নিয়ে নয়, কথা বলেছেন তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে। পাঠকদের জন্য দিব্যা খোসলা কুমারের সেই সাক্ষাৎকারটি এখানে হুবহু তুলে ধরা হল :

অভিনয়ে কিভাবে এলেন?

দিব্যা : আমার বেড়ে ওঠা দিল্লিতে। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে আমি। ছাত্রজীবনে মেধাবী ছিলাম। অনার্স করা অবস্থায় প্রথমে মডেলিং শুরু করি বিভিন্ন ধরনের প্রিন্টেড বিজ্ঞাপনে। আমার বয়স ২০ বছর পূর্ণ হলে মায়ের কাছ থেকে বলিউডে প্রবেশের অনুমতি পাই, যেন আমি আমার স্বপ্নপূরণে সচেষ্ট হই। বলিউডে পা রেখে খুব দ্রুত সময়েই আমি সালমান খানের সঙ্গে একটা মিউজিক ভিডিওতে কাজ করার সুযোগ পাই। এরপর খুব ধীরে এগোই। আরও কিছু মিউজিক ভিডিও ছাড়াও তখন দুয়েকটি সাউথ ইন্ডিয়ান ফিল্মে অভিনয় করি। অবশেষে, ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়। দর্শকদের চোখে পড়ার মতো প্রথম কাজ হিসেবে সুযোগ পাই অনিল শর্মা’র ‘আব তুমারে হাওয়ালে বাতান সাথিও’-তে। এই ছবিতে আমি অক্ষয় কুমার, ববি দেওল ও অমিতাভ বচ্চনের মতো বিশাল মাপের শিল্পীদের সহশিল্পী হিসেবে অভিনয় করি। ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৪-এর ডিসেম্বরে আর আমি ২০০৫ এর ফেব্রুয়ারিতে বিয়ে করি ভুষন কুমারকে।

ভুষন কুমারের সঙ্গে আপনার পরিচয় কি কোনো ছবির শ্যুটিং স্পটে?

দিব্যা : না, আসলে ওর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় পরিচালক অনিল শর্মা’র বাসায়। ভুষন সেখানে মুভির মিউজিক নিয়ে কথা বলতে এসেছিলেন। আমাকে প্রথম দেখেই পছন্দ করে ফেলে ভুষন। এরপর সে আমাকে ম্যাসেজ পাঠানো শুরু করে পাশাপাশি আমাদের মধ্যে চ্যাটিং শুরু হয়। এর কিছুদিন বাদে ভুষন তার বোনের বিয়েতে দিল্লিতে সপরিবারে আমাকে নিমন্ত্রণ করে। সেই বিয়েতেই আমার বাবা-মা’র সঙ্গে ভুষনের সাক্ষাৎ হয়। আমার পরিবার ভুষনকে তাৎক্ষনিকভাবে পছন্দ করে। কেননা, একজন সৃজনশীল মানুষ হিসেবে তার প্রাপ্তি ও পরিচিতি দুটোই ছিল আকর্ষণীয়। আমার মায়ের মৃত্যুতে সম্পর্ক কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও দুজনই টান অনুভব করতাম খুব। এই টান-ই পরবর্তীতে আমাদেরকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করতে প্রেরণা যুগিয়েছে।

ভুষন কুমার একজন নামজাদা প্রযোজক। এর বাইরে পরিবারে তার ভূমিকা কেমন, মানুষ হিসেবেই বা কেমন তিনি?

দিব্যা : ভুষন আসলে মিশ্র ভুমিকার একজন মানুষ। শুরু থেকেই পৃথিবী জয়ের বাসনা তার। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রাপ্তির ঝুলি বোঝাই করতে প্রতিবারই বাস্তবিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। নিজেকে উৎসর্গ করেছেন বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে। ভুষন সাধারণত খুব ব্যস্ত থাকে কাজকর্ম নিয়ে। আমিও কিছুটা ওইরকমই। ও একটু কর্মবিরতিতে থাকলে আমি খুশি হই। ওর বিশ্রামের সময়তেই মূলত আমি আমার প্রয়োজনীয় কথাগুলো সেরে ফেলি। এসব বিষয়ে একজন সাধারণ স্ত্রী হিসেবে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি। অন্যদিকে ভুষন আমাকে সব রকমের স্বাধীনতা দিয়েছে। তবে, আমার কাজের গতিকে ঠিক রাখতে মাঝে মাঝেই ভালোবেসে নানারকম নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। একাকিত্ব ওর একদমই ভালো লাগে না। ও খুব আবেগী। ভুষন মনে করে, ওর মন খুব সরল। তবে ভুষনকে চাপ প্রয়োগ করা যায় না। ও কখনোই কাঁদে না। কোনো ব্যাপারে আহত হলে বা কেউ কথা দিয়ে না রাখলে ব্যথিত হয় ঠিকই কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে প্রস্তুত করে নেন পরবর্তী মুহূর্তকে সুন্দর করতে।

পরিচালনাতেই কেন? অভিনয়ে আর ফিরছেন না?

দিব্যা : আসলে আমি মুম্বাই এসেছিলাম ভিন্ন কিছুর সন্ধানেই। আমি কখনোই ভাবতে পারিনি যে, এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলব। আমি সবসময়ই সৃজনশীল একটা মাঠের খোঁজে ছিলাম। সেভাবেই তৈরি করছিলাম নিজেকে। হঠাৎ বিয়ে করায় কিছুটা পরিবর্তন এসেছে জীবনে। তবে পরিস্থিতি প্রতিকুলে যায়নি। অপেক্ষা ছিল শুধু শান্ত-শীতল একটু বৃষ্টির। আমি কোনো পরিচালকের সঙ্গে আসলে সহযোগী হিসেবে কাজ করতে চাইনি। এমনকি আমার প্রথম চলচ্চিত্রে আমি কোনো পরিচালকের সহযোগিতাও নেইনি। এটা আমার জন্য গৌরবের বলেই আমি মনে করি। ভুষন অন্য সবার মতো নয় যে, তার স্ত্রী বলেই আমাকে সে সিনেমা বানাতে টাকা দেবে। আমার অন্তত ৮টি চিত্রনাট্য বাতিল করে তবেই প্রযোজনা করতে রাজি হয়েছে। অনেকেই হয়তো মনে করে স্ত্রী হিসেবে আমার জন্য সহজ ছিল ব্যাপারটা। মোটেও সেরকম না। বরং আমার ৮-৯ বছরের শ্রম ও সাধনার ফলশ্রুতিতে কাজটা আমি হাতে পেয়েছি। ভুষন আমার চলচ্চিত্র নিয়ে খুব খুশি। পরিচালনায় সে আমাকে উৎসাহ দিচ্ছে। বিয়ের পরপরই আমি সিনেমা নির্মাণের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। পরিচালনায় একধরনের সৃজনশীল স্বাধীনতার প্রয়োজন আছে। ফিল্মের ওপরে আমি কয়েকটি প্রশিক্ষণও নিয়েছি নিজেকে তৈরি করে এগিয়ে যেতে। পাশাপাশি টি-সিরিজের কয়েকটি মিউজিক ভিডিও মেকিং এর কাজও করেছি। সে সব মিউজিক ভিডিওগুলো যখন প্রশংসিত হয়েছে এবং আমার নিজের ভেতরেও পরিতৃপ্তি কাজ করেছে। তখনই চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য মাঠে নেমেছি। এরপর আমি একটি সফল চিত্রনাট্য নির্বাচনে সার্থক হই। এবার ভুষন ‘গ্রিন সিগনাল’ দেয় আমার প্রস্তাবনায়। এভাবেই ইয়ারিয়ার জন্ম।

(দ্য রিপোর্ট/এআর/এইচএসএম/জানুয়ারি ১৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জলসা ঘর এর সর্বশেষ খবর

জলসা ঘর - এর সব খবর