thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ৬ মে 24, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ২৭ শাওয়াল 1445

আবারও সংলাপের আহ্বান জানালেন খালেদা জিয়া

২০১৪ জানুয়ারি ১৫ ২১:১৯:০৯
আবারও সংলাপের আহ্বান জানালেন খালেদা জিয়া

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংলাপ ও সমঝোতার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আবারও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে বুধবার ১৮ দল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য, ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। এই সংগ্রামের পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনে আমাদের আহ্বান অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া দেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আমি আজ আবারও অবিলম্বে সেই লক্ষ্যে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

খালেদা জিয়া সংলাপ ও সমঝোতার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এগুলো হলো- সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, গ্রেফতার, নির্যাতন, হামলা, মামলা বন্ধ, বিএনপি সদর দফতরসহ বিরোধী দলের সকল অফিস খুলে দিয়ে স্বাভাবিক তৎপরতার সুযোগ দেওয়া, শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির উপর থেকে অলিখিত বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে সভা-সমাবেশ, মিছিল-শোভাযাত্রা ও প্রচারাভিযানে হামলা, হুমকি, বাধা দেওয়া বন্ধ করা এবং সকল বন্ধ গণমাধ্যমে খুলে দিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

তিনি বলেন, বর্তমান সংসদ জনপ্রতিনিধিত্বহীন এবং দেশ পরিচালনার ব্যাপারে সরকারের পেছনে জনগণের কোনো অনুমোদন নেই। সংবিধানের দোহাই দিয়ে এবং ক্ষমতার স্বার্থে সংবিধানের অপব্যাখ্যা ও অপব্যবহার করে যে নির্বাচনী প্রহসন আওয়ামী লীগ করেছে, তারা নিজেরাই প্রতি পদক্ষেপে সেই সংবিধান লঙ্ঘন করে চলেছে। কাজেই এ সরকার বৈধ সরকার নয়। একটি অবৈধ সরকারের কোনো দায়িত্ববোধ থাকে না জনগণের প্রতি। এমন একটি সরকার দীর্ঘায়িত হওয়া খুবই বিপজ্জনক।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ২৬ মিনিট লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।

বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বলেন, ইংরেজি ২০১৪ সালের সূচনায় গত ৫ জানুয়ারি আমাদের দেশে গণতন্ত্র আরেকবার নিহত হয়েছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন মৃত। এ দেশের মানুষ তাদের রাষ্ট্র পরিচালনার পদ্ধতি হিসেবে গণতন্ত্রকে বেছে নিলেও বারবার এখানে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। জনগণ আবার সম্মিলিত লড়াই-সংগ্রামে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে। কিন্তু ৫ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ আবার পিছিয়ে পড়লো। পুরোপুরি গণতন্ত্রহীন হয়ে পড়লো। তাই আবার নতুন করে শুরু হয়েছে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। এই সংগ্রামে বাংলাদেশের জনগণের পরাজয়ের ইতিহাস নেই। তাই অনিবার্যভাবে গণতন্ত্র আবারো পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। মানুষ আবারো ফিরে পাবে তাদের ভোটের অধিকার।

শাসক দল ও তাদের মুষ্টিমেয় দোসরদের বাইরে উল্লেখযোগ্য কোনো রাজনৈতিক দলই নির্বাচনের নামে আওয়ামী প্রহসনে শরিক হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের মানুষও এই প্রহসন বর্জন করেছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে কোথাও ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যায়নি। গড়ে সারাদেশে শতকরা ৫ শতাংশ ভোটও পড়েনি।

তিনি বলেন, আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন মারফত প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সকলের চোখের সামনে এতোবড় জালিয়াতি করেও তারা এখনো চড়া গলায় কথা বলছে। প্রতারণা করে, সন্ত্রাস চালিয়ে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে প্রহসনের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতাকে যারা প্রলম্বিত করেছে, তারা বেশি দিন গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ও জনগণের দ্বারা পুরোপুরি বর্জিত হয়ে এখন তাদের আচরণ ও ভাষা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, অশালীন ও বেসামাল হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্র হত্যা করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি। তারা এখন রাজনীতিকেও সম্পূর্ণ কলুষিত করে ফেলছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ ১৮ দলীয় জোট নেতারা উপস্থিত থাকলেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন না।

খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ ভাষণ

(দ্য রিপোর্ট/টিএস-এমএইচ/এমএআর/এনআই/জানুয়ারি ১৫, ২০১৪)

খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ ভাষণ

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর