thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল 24, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ২১ শাওয়াল 1445

‘যারা সাতক্ষীরাকে রক্তাক্ত করেছে তাদের বিচার করা হবে’

২০১৪ জানুয়ারি ২০ ১৬:৫৫:১৯
‘যারা সাতক্ষীরাকে রক্তাক্ত করেছে তাদের বিচার করা হবে’

মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল, সাতক্ষীরা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে যারা সাতক্ষীরাকে রক্তাক্ত করেছে তারা বাংলাদেশের যে প্রান্তে থাকুক না কেনো তাদের বিচার করা হবে।

সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সোমবার বিকেল ৪টায় এক জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ এই জনসভার আয়োজন করে।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাতক্ষীরায় একের পর এক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। হামলা করা হয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর। আর সহ্য করা হবে না। এখন থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বিএনপিকে উদ্দেশে করে বলেন, জামায়াতকে খুশী করতে তারা নির্বাচন বর্জন করেছে। এর খেসারত খালেদাকে দিতে হবে। বাংলাদেশ নিয়ে যত ষড়যন্ত্র হোক তা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মোকাবেলা করা হবে।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে না এসে দেশকে জঙ্গীবাদের রাষ্ট্র কয়েম করতে চায়। তাদের সে চিন্তা সফল হতে দেওয়া হবে না। যে সব পরিবার সহিংসতায় বাড়িঘর হারিয়েছে তাদের পূর্নবাসন করা হবে। ইতোমধ্যে বিজিবিকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনীদের হাত ধরে ক্ষমতায় এসেছিল আর খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল। তাদের সে চক্রান্ত সফল হয়নি। বাংলাদেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দিয়েছে। সরকার শপথ গ্রহণের পর দেশে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা হরতাল অবরোধের নামে রাস্তা কেটে, গাছ কেটে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে তাদের বাংলার মাটিতে কোনো স্থান নেই। এ দেশে তাদের বিচার হবেই হবে।

প্রধানমন্ত্রী ২৫ মিনিটের বক্তব্যে আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াতকে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। তা না হলে সরকারকে যতটা কঠোর হওয়ার প্রয়োজন ততটা কঠোর হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি একা নয় তারা জামায়াতের সঙ্গে মিশে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। এ দেশ আমাদের এ দেশকে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। এর জন্য জীবন গেলেও আমি প্রস্তুত আছি।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে গত দুই মেয়াদে তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের উদহারণ দিয়ে আরও বলেন, দেশে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, জানুয়ারির ১ তারিখে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হচ্ছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল, মৎস্য ও পশু সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম-হানিফ, ডা: দীপু মনি, ডা. রুহুল হক, সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সংসদ সদস্য এডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, সংসদ সদস্য জগলুল হায়দার, জেলা পরিষদ প্রশাসক মুনসুর আহমেদ। জনসভা পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম।

সভাস্থলে প্রধানমন্ত্রী সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, আশাশুনি এতিম ছেলে মেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কপোতাক্ষ নদের পুনর্খনন, তালা উপজেলার পাখিমারা বিলের টিআরএম প্রকল্পের উদ্বোধন, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের একাডেমিক কাম প্রশাসনিক ভবন নির্মাণসহ ১১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী সাতক্ষীরায় পৌঁছে সার্কিট হাউজে সাতক্ষীরায় জামায়াত-শিবিরের হাতে নিহত ১৬টি পরিবারের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা, ৫৫ জন গুরুতর আহতদের প্রত্যেককে ২ লাখ ও ৮৩ জন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা প্রধান করেন।

সেখানে তিনি তার বক্তব্যে নিহত ও আহতদের পরিবারের স্বজনদের ধৈয ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা একজনকে হারিয়েছেন আমি আমার পরিবারের সকলকে হারিয়েছি। তিনি সব সময় তাদের পাশে থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

(দ্য রিপোর্ট/এমআর/এসবি/আরকে/জানুয়ারি ২০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর