thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৪ জমাদিউল আউয়াল 1446

পবা’র পর্যবেক্ষণ

বুড়িগঙ্গায় বিষ: জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকা অসম্ভব

২০১৪ জানুয়ারি ২১ ১৮:৩৮:১৪
বুড়িগঙ্গায় বিষ: জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকা অসম্ভব

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বুড়িগঙ্গা নদীর পানির গুনাগুন ও দূষণের মাত্রা পর্যবেক্ষণের জন্য সদরঘাট থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত নৌযানে করে অভিযান করেছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন। সাধারণত নদীর পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমপক্ষে ৫ শতাংশ থাকা উচিৎ। কিন্তু বুড়িগঙ্গা নদীর পানি এতোই দূষণের শিকার যে অক্সিজেন শতকরা ১ শতাংশও নেই। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এ পরিবেশে কোনো জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।

পুরান ঢাকার সদরঘাট থেকে মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর পানি পর্যবেক্ষণের জন্য নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার উদ্দেশে রওনা দেয় দলটি।

এ সময় বিভিন্ন স্থানে থেমে নদীর পানি পরীক্ষা করা হয়। সদরঘাটের পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ (DO mg/l) .৫২ শতাংশ ও ক্ষারের পরিমাণ (PH) ৭.৭৩ শতাংশ, ধোলাই খালের পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ (DO mg/l) .৩৮ শতাংশ ও ক্ষারের পরিমাণ (PH) ৭.৬৩ শতাংশ, মিলব্যারাকের পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ (DO mg/l) .৬৫ শতাংশ ও ক্ষারের পরিমাণ (PH) ৭.৭৫ শতাংশ, পোস্তগোলা শ্মশানঘাটের পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ (DO mg/l) .৫৫ শতাংশ ও ক্ষারের পরিমাণ (PH) ৭.৭৯ শতাংশ, শ্যামপুর ইকোপার্কের সামনের পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ (DO mg/l) ২.৯৪ শতাংশ ও ক্ষারের পরিমাণ (PH) ৯.৯৯ শতাংশ, শ্যামপুর ঘাটের একটি ডায়িং কারখানার ড্রেন থেকে সরাসরি অক্সিজেনের পরিমাণ (DO mg/l) ৪.০২ শতাংশ ও ক্ষারের পরিমাণ (PH) ১০.৩২ শতাংশ, ম্যাচ ফ্যাক্টরির পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ (DO mg/l) .৫১ শতাংশ ও ক্ষারের পরিমাণ (PH) ৭.৯৪ শতাংশ, পাগলা শোধানাগারে অক্সিজেনের পরিমাণ (DO mg/l) ২.১৬ শতাংশ ও ক্ষারের পরিমাণ (PH) ৮.৮৪ শতাংশ, পাগলা শোধানাগারের নদীর পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ (DO mg/l) .৩৩ শতাংশ ও ক্ষারের পরিমাণ (PH) ৮.০১ শতাংশ, পাগলা বাজারের পাশের পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ (DO mg/l) ১.৪৮ শতাংশ ও ক্ষারের পরিমাণ (PH) ৭.৯৮ শতাংশ, পাগলা বাজারের পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ (DO mg/l) .৩০ শতাংশ ও ক্ষারের পরিমাণ (PH) ৮ শতাংশ পাওয়া যায়।

পবা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মুহাম্মদ আব্দুস সোবহান দ্য রিপোর্টকে বলেন, আমরা গত জুন মাস থেকে প্রতিমাসেই এই পর্যবেক্ষণ করে আসছি। অনেকে মনে করেন সাধারণ সময়ের থেকে বর্ষার সময় আসলে পানি বাড়ার কারণে হয়তো দূষণটাও কম হয়। কিন্তু আসলে এমনটি না। সাধারণত নদীর পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমপক্ষে ৫ শতাংশ থাকা উচিৎ। কিন্তু বুড়িগঙ্গা নদীর পানি এতোই দূষণের শিকার যে অক্সিজেন শতকরা ১ শতাংশও অনেক স্থানে নেই। এ ভাবে আসলে কোনো জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকা সম্ভব না।

মুহাম্মদ আব্দুস সোবহান আরও বলেন, পৃথিবীর বড় বড় সকল শহর গড়ে উঠেছে কোনো না কোনো নদীকে কেন্দ্র করে। কারণ পূর্বে যখন মানুষ যাতায়াত করতো তখন নৌযান ছাড়া আর কোনো যানবাহন ছিল না। বড় বড় বাণিজ্য নৌ-পথকে কেন্দ্র করেই হত। তাই নদীকে বলা হয় শহরের প্রাণ। বিশ্বের সকল দেশ ও দেশের নাগরিকরা নদীকে সুস্থ রাখতে সচেতন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য এতো বড় নদী থাকতেও আমরা এর মর্ম বুঝতে পারছি না।

পর্যবেক্ষণের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র মুহাম্মদ হুসাইন, পবা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনোয়ার হোসেন, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সামিউল হাসান, মঞ্জুশ্রী (নেপাল), প্রভাকর গড় (ভারত) প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/এসবি/আরকে/জানুয়ারি ২১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর