thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৪ জমাদিউল আউয়াল 1446

প্রথম অধিবেশন ঘিরে ৫৮ দফা কর্মপরিকল্পনা

২০১৪ জানুয়ারি ২৭ ০১:৫৪:৫৯
প্রথম অধিবেশন ঘিরে ৫৮ দফা কর্মপরিকল্পনা

রাজু হামিদ, দ্য রিপোর্ট : দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন ঘিরে ৫৮ দফা কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে সংসদ সচিবালয়। এবারের অধিবেশনে বিশেষ ব্যাতিক্রম রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রেসিডেন্ট প্লাজা ব্যবহার করে অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করবেন।

আগামী বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় বসছে জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা দ্বিতীয় দফায় সরকার গঠনের পর এটিই প্রথম অধিবেশন। সময় আসন্ন, তাই পুরোদমে চলছে প্রস্তুতির কাজ।

ইতোমধ্যে সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আশরাফুল মকবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ৫৮ দফা কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে পাঠানো এক চিঠিতে জানানো হয়েছে, এবার সংসদ ভবনে প্রবেশের সময় রাষ্ট্রপতি প্রেডিডেন্ট প্লাজা ব্যবহার করবেন। এরপর থেকে ওই প্লাজা ধুয়ে-মুছে পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি সংসদের উদ্বোধনী অধিবেশন ও বছরের প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিনে সংসদে ভাষণ দিয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি।

সংসদ ভবনের উত্তর দিকে এই প্লাজার অবস্থান। প্রায় ৬৫ হাজার বর্গফুটের শ্বেত পাথরে নির্মিত এই প্লাজা দিয়ে প্রবেশ করে তিনতলায় সংসদের অধিবেশন কক্ষ পর্যন্ত হেটেই যেতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন এই প্লাজা ব্যবহার করতেন না রাষ্ট্রপতিরা। এর পরিবর্তে সংসদের ড্রাইভওয়ে দিয়ে প্রবেশ করে বিশেষ লিফটে সংসদ কক্ষে যেতেন তারা। ফলে ওই প্লাজা সারা বছরই অব্যবহৃতই থাকতো। সর্বশেষ বিএনপি সরকারের আমলে ২০০২ সালের জানুয়ারি মাসে বছরের প্রথম অধিবেশন শুরুর দিন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এই প্রেসিডেন্ট প্লাজা ব্যবহার করেন। লুই কানের নকশার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ওই প্লাজা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

রবিবার সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট প্লাজা পরিচ্ছন্ন করার কাজ শেষ পর্যায়ে। সেখানে বাসানো হয়েছে বিশেষ সিসি ক্যামেরা। একই সঙ্গে সেখানে অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। আগের রাষ্ট্রপতিরা শারীরিকভাবে সক্ষম না থাকায় এই প্লাজা ব্যবহার করতে না বলে জানিয়েছেন সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা।

তারা জানান, আগের রাষ্ট্রপতিরা বছরের প্রথম অধিবেশন ও বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে সংসদে আসতেন। তবে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মাঝেমধ্যেই সংসদ ভবনে আসেন।

এদিকে সংসদ অধিবেশন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ৫৮টি পদক্ষেপের অধিকাংশই বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে। তবে সংসদ অধিবেশন কক্ষে আসন বন্টনের কাজটি আটকে আছে। বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ নির্বাচিত হলে সরকারি ও বিরোধী দলের চিফ হুইপের সঙ্গে বসে আসন বন্টন চূড়ান্ত করবেন স্পিকার। এছাড়া আরো কিছু বিষয়ে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

অধিবেশনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এজন্য সংসদের ট্যানেল ও ড্রাইভওয়েতে যে কোন ধরনের গাড়ি রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে দর্শণার্থীদের মোবাইল বাইরে রেখে প্রবেশ করতে হবে। সংসদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একটির বেশি মোবাইল নিয়ে ভবনে প্রবেশ করতে পারবেন না। এছাড়া প্রত্যেকটি মোবাইল বিশেষভাবে পরীক্ষারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে চারটি বুলেট ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন মোবাইল গান আবিস্কৃত হওয়ায় এই সতর্ক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে সংসদ সচিবালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এছাড়া সংসদের অধিবেশন কক্ষে সংসদ সদস্যদের বসার চেয়ার পরীক্ষা ও অধিবেশন চলাকালীন সব লিফট ত্রুটিমুক্ত রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সদস্যদের মাইক্রোফোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সংসদ ভবন ফুলসহ বিভিন্ন গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে। সংসদ ভবন এলাকার সড়কগুলো সংস্কারের কাজ চলছে। অধিবেশন চলাকালে অক্সিজেন সুবিধাসহ সার্বক্ষণিক একটি অ্যাম্বুলেন্স থাকবে। সংসদ লবিতে একজন ডাক্তারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী থাকবে। এছাড়া রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও প্রবেশের সময় রেওয়াজ অনুযায়ী বিউগল বাজানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিল্লুর রহমান সংসদে ভাষণ দেওয়ার সময় সারসংক্ষেপ পাঠ করতেন। কিন্তু বর্তমান রাষ্ট্রপতি তার ভাষণের পুরোটাই পড়বেন। আর তিনি বসে নয়, দাঁড়িয়েই ভাষণ দেবেন। তার ভাষণে ৫০ মিনিটের মতো সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভাষণ চূড়ান্ত করার পাশাপাশি এ সংক্রান্ত প্রস্তুতিও শেষ করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরএইচ/জেএম/জানুয়ার ২৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর