thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউস সানি 1446

অর্থ জালিয়াতি : ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আসামি ৫৩

২০১৩ নভেম্বর ০২ ২১:২৮:৫২
অর্থ জালিয়াতি : ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আসামি ৫৩

দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : প্রায় ১২শ’ কোটি টাকা আত্মাসাতের অভিযোগে ‘বিসমিল্লাহ গ্রুপ’ ও সংশ্লিষ্ট কয়েকটি ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রবিবার রাজধানীর যে কোনো থানায় ৫৩ জনের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা দায়ের করবেন সংস্থাটির এ সংক্রান্ত অনুসন্ধান কর্মকর্তা সৈয়দ ইকবাল হোসেন।

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, জনতা, প্রিমিয়ার, যমুনা ও প্রাইম ব্যাংকের এক ডজনেরও বেশি কর্মকর্তা এ দুর্নীতি মামলার আসামি হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এর আগে বুধবার মামলাগুলো দায়েরের জন্য দুদকের নিয়মিত বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। ৫৩ আসামির মধ্যে ৪০ জন ব্যাংক কর্মকর্তা আর বাকি ১৩ জন হচ্ছেন বিসমিল্লাহ গ্রুপ ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা।

রবিবার মামলা করার বিষয়টি দিরিপোর্ট ২৪কে নিশ্চিত করেন দুদক জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য। মামলার বাদীর প্রস্তুতির ঘাটতি থাকলে পরদিন সোমবার মামলা দায়ের করতে পারে বলেও জানান তিনি। মামলা দায়েরের পরপরই আসামিদের গ্রেফতার অভিযান শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের গ্রেফতার অভিযানের সমন্বয়ক সংস্থাটির পরিচালক উইং কমান্ডার মো. তাহিদুল ইসলাম।

দুদকের অনুমোদন পাওয়া মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মালামাল রফতানি না করেই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া বিএল ইস্যু করে রফতানি দেখিয়ে তার বিপরীতে ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

২০১১ সালের জুন থেকে ২০১২ সালের জুলাই পর্যন্ত বিসমিল্লাহ গ্রুপ রফতানির নামে ‘ব্যাক টু ব্যাক’ এলসি ও ‘ফরেন ডকুমেন্টরি বিল পারচেজ’এর (এফডিবিপি) দায় বাবদ প্রায় ১ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। এর মধ্যে ফান্ডেড ৯৩২ কোটি ও নন ফান্ডেড ২৪৪ কোটি টাকা। পরবর্তীকালে মানি লন্ডারিংয়ের (অর্থ পাচার) মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে টাকার অবস্থান গোপন করা হয় বিভিন্ন প্রক্রিয়ায়।

যাদের আসামি করে মামলা দায়েরের অনুমোদন দেওয়া হয় তাদের মধ্যে রয়েছেন- বিসমিল্লাহ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খাজা সোলেমান আনোয়ার চৌধুরী, তার বাবা শফিকুল আনোয়ার চৌধুরী, খাজা সোলেমানের স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নওরীন হাবিব, মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) আবুল হোসেন চৌধুরী, উপ-মহাব্যবস্থাপক আকবর আজিজ মুত্তাকি, বিসমিল্লাহ গ্রুপের সাবেক ব্যবস্থাপক রফিকুল আলম, ম্যানেজার রিয়াজউদ্দিন সাফি।

এছাড়া বিসমিল্লাহ গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান নেটওয়ার্ক ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিংয়ের ব্যবস্থাপক আক্তার হোসেন, মো. মঈন উদ্দিন, গোলাম মহিউদ্দিন, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সরোয়ার জাহান এবং আতিকুর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে বিসমিল্লাহ গ্রুপের এমডি ও চেয়ারম্যান পলাতক রয়েছেন।

এদিকে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের এসইভিপি গোলাম ওহাব, আনিসুল কবির, এসভিপি দুলাল হোসেন, জুনিয়র এভিপি জান্নাতুল মাওলা, ইস্কাটন শাখার ম্যানেজার আসলামুল হক, ডেপুটি ম্যানেজার এসএম হাসানুল কবির, এসইও শহিদুল ইসলাম।

জনতা ব্যাংকের যাদের আসামি করা হচ্ছে তারা হলেন- ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আবদুস সালাম আজাদ, উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আজমুল হক, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সহকারি মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) সজল কুমার ঘোষ, মোস্তাক আহমেদ খান, ফয়েজুর রহমান ভূঁইয়া, জেসমিন আক্তার, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার (এসইও) জয়নাল আবেদীন, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আতিকুর রহমান, সোহেবুল কবির এবং সাবেক ম্যানেজার রফিকুল আলম।

প্রিমিয়ার ব্যাংকের যাদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহাবউদ্দিন সরদার, মতিঝিল শাখার ম্যানেজার শাহিনুর রহমান, ডেপুটি ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন, এফএভিপি এমএ রহমান, তানজিরুল আলম, এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. আরিফুর রহমান ও তাবাসসুম।

যমুনা ব্যাংকের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মোজাম্মেল হোসেন, মতিঝিল শাখার ম্যানেজার রফিকুল হাসান, এসএভিপি মোর্শেদুর রহমান, এসএম জাহিদুল ইসলাম, এসইও এসএম মাসুককে আসামি হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ।

এছাড়া প্রাইম ব্যাংকের যাদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তারা হলেন-ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) ইয়াসিন আলী, মতিঝিল শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এভিপি) এবিএম শাহজাহান, ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এফএভিপি) কাজী খায়রুল ইসলাম, জানে আলম, ম্যানেজার মোজাম্মেল হোসেন, খন্দকার ইকবাল, ইব্রাহিম হোসেন গাজী, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার (এসইও) ইকবাল আজিজ কামাল, আবুল কালাম।

উল্লেখ্য, বিসমিল্লাহ গ্রুপের ঋণ জালিয়াতির ঘটনা অনুসন্ধানে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি পাঁচ সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করে দুদক। সংস্থাটির উপ-পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে এ অনুসন্ধান টিমের অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারি উপ-পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম, গুলশান আনোয়ার প্রধান, উপ-সহকারি পরিচালক সরদার মঞ্জুর আহমেদ এবং মো. আল-আমিন।

(দিরিপোর্ট২৪/এমএ/এনডিএস/এমডি/নভেম্বর ০২, ২১০৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর