thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউল আউয়াল 1446

জেলহত্যা দিবস আজ

২০১৩ নভেম্বর ০৩ ০৮:৫১:৫৫
জেলহত্যা দিবস আজ

দিরিপোর্ট২৪ ডেস্ক : আজ ৩ নভেম্বর, জেলহত্যা দিবস। মানবসভ্যতার ইতিহাসে কলঙ্কিত একটি দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী জাতীয় চার নেতাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্বরোচিতভাবে হত্যা করা হয়।

বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী ও আবু হেনা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে পাকিস্তানি ভাবধারা ফিরিয়ে আনতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এ চার নেতাকে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে যারা যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান, তাদেরকে ঘাতকচক্র হত্যা করে। বাংলাদেশ যাতে তাদের নেতৃত্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে সেই সুদূরপ্রসারী চক্রান্তের অংশ হিসেবে এ চার নেতাকে হত্যা করা হয়।

এদিকে হত্যার দীর্ঘদিন পরও এর বিচার কার্যকরে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৮ সালে জেলহত্যা মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৪ সালে নিম্নআদালতে এ মামলার রায় হয়। জেলহত্যা মামলার বিচারের চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয় গত বছরের ৩০ এপ্রিল। সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ ৩ জনের ফাঁসি এবং ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখে। এখন এ রায় কার্যকরের অপেক্ষায় আছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের শত্রু, ঘাতকগোষ্ঠী সেদিন জাতীয় এ চার নেতাকে হত্যা করতে শুধু গুলি চালিয়ে ক্ষান্ত হয়নি, তাদের গুলিবিদ্ধ দেহকে বর্বরোচিতভাবে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় এ ধরনের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। এই নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় সেদিন শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয়, সারাবিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে যায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে এবং ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার মাধ্যমে স্বাধীনতার পরাজিত ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে নস্যাত্ করতে চেয়েছিল। সংবিধানকে করা হয় ক্ষতবিক্ষত। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ড ছিল একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা। হত্যাকারী এবং তাদের সহযোগীদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির আবর্তে নিক্ষেপ করা। পুনর্গঠন ও গণতান্ত্রিকতার পথ থেকে সদ্য স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বিচ্যুত করা।

জাতীয় চার নেতা হত্যাকারীদের শাস্তি সুনিশ্চিত করা এখন জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে।

যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালন এবং জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রবিবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ। সকালে জাতীয় চার নেতার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জেলহত্যা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মী-সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।

(দিরিপোর্ট২৪/ওএস/জেএম/এইচএসএম/নভেম্বর ০৩, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর