thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২২ জমাদিউল আউয়াল 1446

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় নিজামী-বাবরসহ ১৪ জনের ফাঁসি

২০১৪ জানুয়ারি ৩০ ১২:৪৩:২৫
দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় নিজামী-বাবরসহ ১৪ জনের ফাঁসি

মহসীন কাজী, চট্টগ্রাম অফিস : বহুল আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সাবেক শিল্প মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় দায়ের করা চোরাচালান মামলায় তাদের মৃত্যুদণ্ড ও অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। অস্ত্র মামলার আরেকটি ধারায় পৃথকভাবে সাত বছরের দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এস এম মুজিবুর রহমান এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডাদেশসহ সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী (৮২), বিএনপি নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর (৫৩), এনএসআইয়ের সাবেক দুই প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী (৬০) ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম (৬১), সাবেক পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার সাহাবুদ্দিন আহমেদ (৫৩), সাবেক উপ-পরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন (৪৩), সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন (৪৭), সিইউএফএলের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন উদ্দিন তালুকদার (৬২) এবং সংস্থাটির সাবেক জিএম (প্রশাসন) একেএম এনামুল হক (৬১), চোরাচালানি হাফিজুর রহমান হাফিজ (৪৮), অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দীন মোহাম্মদ (৪৫), মাছধরা নৌকার মালিক হাজী আবদুস সোবহান (৬০), সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব নূরুল আমিন ও উলফা সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া।

এদের মধ্যে পরেশ বড়ুয়া ও নূরুল আমিন পলাতক রয়েছেন। জামিনে থাকা হাজী আবদুস সোবহান রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ে দণ্ডিত হওয়ার পর তাকে কারাগারে নেওয়া হয়।

রায়ে খালাস পেয়েছেন জামিনে থাকা আসামি সানোয়ার হোসেন চৌধুরী (৫০), দিলদার হোসেন চৌধুরী (৪৭) মরিয়ম বেগম ওরফে বদনি মেম্বার (৪৩), জসীম উদ্দিন ওরফে জসীম (৩৫), আব্দুল আজিজ (৪৯), মো. আকতার (৪৬), মো.জাহাঙ্গীর (৪৩), নূরুল আবছার ওরফে আবছার মেম্বার (৪৫), আরজু মিয়া প্রকাশ পাগলা (৫৮), এজাহার মিয়া (৫৫), মুজিবুর রহমান ভুলু (৫৭), শেখ মোহাম্মদ (৪৭), ফজল আহাম্মদ চৌধুরী (৪৩), আকবর আলী (৪৬), বাদশাহ মিয়া (২৪), ওসমান মিস্ত্রি (৩৬), আব্দুল মান্নান (৩২), কবির আহাম্মদ (৩৪), মো.রফিক (৩০), মনির আহাম্মদ (৩২), আব্দুল মালেক (৩৫), মঞ্জুরুল আলম (২৮), সালেহ জহুর প্রকাশ গুরা মিয়া (৩০), ফিরোজ আহম্মদ (৩২), সাইফুদ্দিন (৫০) এবং কামাল মিয়া (৩৮) এবং পলাতক আসামি প্রদীপ কুমার দাশ প্রকাশ ব্রজগোপাল (৩৮), নূরনবী (৩৬), সিরাজুল ইসলাম (৩৩), হেলাল উদ্দিন (৩০), বাবুল মিয়া (৩৪), আব্দুর রহিম মাঝি (৩৫), আব্দুস সবুর (৩২), মো.শাহআলম (৩৪), মো. সোবহান (৩৩) ও শাহজাহান (৩৮)।

এ মামলার যেসব আসামি মারা যান তারা হলেন- ইয়াকুব আলী, মুনির আহমেদ, আতাউর রহমান ও আবুল কাশেম মধু।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী চট্টগ্রাম মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহমদ জানান, দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা মামলার আসামি সংখ্যা ৫৪ জন। চোরাচালান মামলায় আসামি ৫৬ জন। উভয় মামলার চার আসামি ইতোমধ্যেই মারা গেছেন। দুই মামলায় ১৪ জন ছাড়া বাকি সকল আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

পিপি কামাল উদ্দিন বলেন, চোরাচালান আইনের ২৫/বি(১) ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ১৪ আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং অস্ত্র আইনের ১৯(এফ) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় একই আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন ও ১৯(সি) ধারায় প্রমাণিত অপরাধে সাত বছরের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে এজলাসে উঠেন চট্টগ্রামের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এস এম মুজিবুর রহমান। তিনি ১২টা ২৫ মিনিটে রায় পাঠ শুরু করেন।

এ মামলায় আটক থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ কারাগারে আটক সকল আসামিকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ১০ মিনিটে তাদের আদালতে উপস্থিত করা হয়।

সকাল সোয়া ১০টার দিকে বিচারক এস এম মুজিবুর আদালতে প্রবেশ করেন। রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামালউদ্দিন আদালতে আসেন ১০টা ২০ মিনিটে।

এ রায়কে ঘিরে আদালত এলাকায় নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। র‌্যাব, পুলিশ ও আর্মড পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া আদালতের প্রতিটি প্রবেশ পথে বসানো হয় চেকপোস্ট। মিডিয়াকর্মী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া কাউকে আদালত এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

দশ বছর আগে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্ণফুলী থানায় দায়ের করা মামলার সার্বিক কার্যক্রম শেষে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রায় ঘোষণার সময় নির্ধারণ করা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/এমকে/জেএম/জানুয়ারি ৩০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর