thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২২ জমাদিউল আউয়াল 1446

ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কঠিন শর্তে ঋণ নিচ্ছে সরকার

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ০১ ১৫:৫৯:৪৫
ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কঠিন শর্তে ঋণ নিচ্ছে সরকার

জোসনা জামান, দ্য রিপোর্ট : ঘোড়াশাল ৩৬৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনে কঠিন শর্তে ঋণ নিচ্ছে সরকার। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫১১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৭৪৫ কোটি ৫ লাখ, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ১১৩ কোটি ৭৩ লাখ এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না লিমিটেড (আইসিবিসি) থেকে নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার ৬৫৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

এ ঋণের বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মতামত বা সম্মতি চাওয়া হলেও তা পাওয়া যায়নি। এ পরিস্থিতিতেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কঠিন শর্তের এ ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে। তবে ইআরডি সরাসরি কোনো মতামত না দিলেও শুধু বলেছে এক্সিম ব্যাংক অব চায়না এর ২০১৩ সালের ক্রেডিড লাইন এ প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানোর সময়সীমা ইতোমধ্যে অতিবাহিত হয়েছে। তাই উল্লেখিত প্রকল্পের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী চীন থেকে নমনীয় শর্তে বৈদেশিক ঋণ প্রাপ্তির সম্ভাবনা নেই।

এ সংক্রান্ত প্রকল্পটি ইতোমধ্যেই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে অনুমোদনের জন্য প্রস্তুতি শেষ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। অনুমোদন পেলে ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শেষ করবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

এ বিষয়ে এ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ওপর ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রকল্পের ডিপিপি (ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) পুনর্গঠিত করা হয়েছে। এটি বায়ার্স ক্রেডিডে বাস্তবায়ন করা হবে এবং প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার নির্ভরতা বাড়বে। তাই একনেকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ জানায়, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না লিমিটেড (আইসিবিসি) দেওয়া এ ঋণের সুদের হার ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ। এ ছাড়া ম্যানেজমেন্ট ফি ১ দশমিক ৫ শতাংশ, ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়াম ৭ শতাংশ এবং কমিটমেন্ট ফি ১ শতাংশ হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল। ২০১০ সালের পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ নিরাপত্তা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য সরকার নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতা অর্জন করতে চাচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করার প্রচেষ্টা রয়েছে। দেশে প্রতিবছর বিদ্যুতের চাহিদা ১০ থেকে ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ জন্য নতুন নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

সূত্র জানায়, ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ২০১৫ সালের মধ্যে ১১ হাজার ৪৫৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে প্রদানের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পটির মাধ্যমে ৩৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। তাই এ প্রকল্পটি ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গতিপূর্ণ।

প্রকল্পটির আওতায় মূল কার্যক্রম হচ্ছে ২৫৪ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন ইউনিট স্থাপন, ১০৯ মেগাওয়াট স্টিম টারবাইন স্থাপন, হিট রিকভারি স্টিম জেনারেটর সংগ্রহ, স্টেপ-আপ ট্রান্সফরমার, সুইচ গিয়ার ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, ২৩০ কেভি সুইচ ইয়ার্ড নির্মাণ, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন এবং কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি সংগ্রহ।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্র জানায়, গত বছরের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সরকারি খাতে ঘোড়াশাল ৩৬৫ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি টার্ন কী ভিত্তিতে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ জন্য রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স চায়না ন্যাশনাল টেকনিক্যাল ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএনটিআইসি), চায়না অ্যান্ড সিএমসি চায়না কনর্সোটিয়ামের উদ্ধৃত দর প্রস্তাব সরকারের অনুমোদন লাভ করেছে।

(দ্য রিপোর্ট/জেজে/এনডিএস/আরকে/ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর

অর্থ ও বাণিজ্য - এর সব খবর