thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২০ মে 24, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ১২ জিলকদ  1445

‘দেশে ১০০টি শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হবে’

২০১৬ ফেব্রুয়ারি ২৮ ১৫:০৩:৫০
‘দেশে ১০০টি শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হবে’

চট্টগ্রাম অফিস : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে চাই। তবে সবকিছুই হতে হবে পরিকল্পিত। আর সেই চিন্তা থেকেই আমরা যত্রতত্র শিল্প কল-কারখানা গড়ে না তুলে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজে হাত দিয়েছি। সারাদেশে ১০০টি শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। পরিবেশবান্ধব শিল্প গড়ে তোলাই আমাদের প্রধান টার্গেট।’

তিনি রবিবার দুপুর ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের মীরসরাইসহ সারাদেশে ১০টি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন প্রকল্প কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশে ১০০টি শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এই শিল্পাঞ্চল হবে সরকারি-বেসরকারি। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে। অথবা আমাদের দেশের সাথে অন্য দেশের যেটা জিইটুজি যৌথ উদ্যোগ। যেটা আমাদের জন্য প্রযোজ্য, যেখানে যেভাবে দরকার সেভাবে এই শিল্পাঞ্চলগুলো গড়ে তুলব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। বিনিয়োগকারীদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি। সরকার ব্যবসা করতে চায় না, সরকার ব্যবসায়ীদের জন্য পরিবেশ নিশ্চিত করতে করতে চায়। সরকার চায় দেশের উন্নয়ন।’

তিনি বলেন, ‘এই শিল্পাঞ্চলগুলো গড়ে তুললে সুবিধা হচ্ছে, আমাদের একেক অঞ্চলে একেক রকম পণ্য উৎপাদন হয়। ফলে ওই সব অঞ্চলে শিল্পাঞ্চলগুলো প্রতিষ্ঠা হলে সবচেয়ে সুবিধা হয় প্রক্রিয়াজাত করতে। যেটা বিশ্ববাজারে ওই অঞ্চলের পণ্যগুলো বাজারজাত করতে সুবিধা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববাজারে আমাদের নতুন দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে, যেটা আমি ১৯৯৬ সালে উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এবার সফল করতে পেরেছি। যেমন— বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটান (বিভিআইএন) এই চারটি দেশ মিলে আমরা যৌথ ব্যবসা-বাণিজ্য-অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং যোগাযোগের ব্যবস্থা উন্মুক্ত করে দিয়েছি।’

অপরদিকে, মিয়ানমার-চায়না-ভারত-বাংলাদেশ (বিসিআইএমইসি) অর্থাৎ ইকোনমিক করিডোর। এই যে এদিকে চারটা দেশ, ওদিকে চারটা দেশ আমরা যে যোগাযোগ স্থাপন করলাম, এতে করে শিল্প প্রতিষ্ঠা করা, বাণিজ্য বৃদ্ধি করা এবং আমাদের যে বিশাল বাজার সৃষ্টি হলো যেটা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বিশাল সুযোগ সৃষ্টি হলো।’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘যেখানে সেখানে ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুললে একটা সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সেটা হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রির বর্জ্যগুলো নদীতে যাচ্ছে, ফসলি জমিতে মিশে যাচ্ছে। ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। কাজেই আমরা যত্রতত্র ইন্ডাস্ট্রি গড়ে না তোলে পরিকল্পিতভাবে সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী উন্নয়ন করব। বাংলাদেশব্যাপী এই কারণে, আমাদের বাংলাদেশের যে ভৌগোলিক অবস্থান সেটা সারা বিশ্বের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের লোক সংখ্যার অভাব নেই। কর্মক্ষম, কর্মউদ্যেমী যুব সমাজ রয়েছে। যাদের কাজে লাগানোর জন্য পরিকল্পিত শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলি তাহলে এই লোকসংখ্যা আমাদের সম্পদে তৈরি হবে।’

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) বাস্তবায়নে গড়ে ওঠা এ ১০টি অঞ্চলের মধ্যে চারটি সরকারি ও ছয়টি বেসরকারি। সরকারিগুলো হলো— চট্টগ্রামের মীরসরাই, মৌলভীবাজারের শ্রীহট্ট ও বাগেরহাটের মংলা এবং কক্সবাজারের সাবরাং পর্যটন অঞ্চল।

বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা ছয়টি হলো— নরসিংদীর পলাশে ‘এ কে খান অর্থনৈতিক অঞ্চল’, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ‘আবদুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল’, নারায়ণগঞ্জের ‘মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অর্থনৈতিক অঞ্চল’ ও ‘মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল’, গাজীপুরে ‘বে অর্থনৈতিক অঞ্চল’ এবং নারায়ণগঞ্জে ‘আমান অর্থনৈতিক অঞ্চল’।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল।

এদিকে চট্টগ্রামের মীরসরাই অর্থনৈতিক জোন প্রকল্প প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও চট্টগ্রামের সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তারা।

ইকোনমিক জোন কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে মীরসরাই ইছাখালীতে বিশাল সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রম নগরী থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল। মীরসরাইয়ে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১২২২টি শিল্পপ্লট তৈরি করা হবে। এসব প্লটে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠলে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন (বেজা)।

বঙ্গোপসাগরের পাড় ঘেঁষে এ চরাঞ্চলে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। এখানে নির্মিত হবে ছোট-বড় ১২ শ’র বেশি শিল্প-কারখানা। থাকবে বন্দর জেটি সুবিধা, বিদ্যুকেন্দ্র, ট্যুরিজম পার্কসহ নানা সুযোগ-সুবিধা। অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ঘিরে পুরো মীরসরাইয়ে এখন থেকেই পরিলক্ষিত হচ্ছে প্রাণচাঞ্চল্য।

(দ্য রিপোর্ট/এসবি/সা/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর