thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ১২ মার্চ 25, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১,  ১২ রমজান 1446

এবার ৩০ হাজার টাকায় রফা!

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ০৫ ২২:০৮:২৫
এবার ৩০ হাজার টাকায় রফা!

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : প্রথমে এক হাজার টাকার বিনিময়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে আনা ৩৮ পিস শাড়ি পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিতে সক্ষম হয় সীমান্ত নামের এক বাসযাত্রী। কিন্তু বিষয়টি দ্য রিপোর্টের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানতে পারলে ওই যাত্রীকে আবারও নামিয়ে নেওয়া হয়। পরে তার কাছ থেকে আরও ৩০ হাজার টাকা গ্রহণের মাধ্যমে শাড়িসহ তাকে ছেড়ে দেয় মানিকগঞ্জের শিবালয় থানার বরঙ্গাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। দ্য রিপোর্টের কাছে এ অভিযোগ করেছেন সীমান্ত।

পুলিশকে টাকা দেওয়া বাসযাত্রী সীমান্ত এবং ওই পরিবহনের ভুক্তভোগী যাত্রী ও সুপারভাইজর ওমর ফারুকের মাধ্যমে দ্য রিপোর্ট এ সব বিষয়ে অবগত হয়।

কলকাতা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী সোহাগ পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৬৬৫৮) সুপারভাইজর ওমর ফারুক দ্য রিপোর্টকে বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটের দুই কিলোমিটার আগে মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৪টায় পুলিশের নির্দেশে বাসটি দাঁড় করানো হয়। এ সময় গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই মোল্লা জাকিরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গাড়ি তল্লাশি করে। তারা সীমান্ত নামের বাংলাদেশি ওই যাত্রীর লাগেজ থেকে ৩৮ পিস ভারতীয় শাড়ি উদ্ধার করে। পরে টাকার বিনিময়ে শাড়িসহ ওই যাত্রীকে ছেড়ে দেয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, ঘুষ হিসেবে পুলিশকে পাঁচ হাজার টাকা দেন সীমান্ত।

তবে সীমান্ত দ্য রিপোর্টকে বলেন, তিনি পুলিশকে এক হাজার টাকা দিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রীরা দ্য রিপোর্টকে বলেন, এসআই মোল্লা জাকির এ সময় উপস্থিত যাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ‘এগুলো অস্ত্র নয়, মাদকও নয়। যাত্রীদের অনুরোধে মালসহ তাকে (সীমান্ত) ছেড়ে দেওয়া হলো।’

এ বিষয়ে জানতে দ্য রিপোর্টের পক্ষ থেকে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মানিকগঞ্জের শিবালয় থানা এলাকায় এলে বরঙ্গাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা পরিবহনটি দাঁড় করায় এবং যাত্রী সীমান্তকে তার লাগেজসহ নামিয়ে নেয়।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে সীমান্ত দ্য রিপোর্টকে মুঠোফেনে জানান, বরঙ্গাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্য ফারুক, মানিক, কিবরিয়া ও হারুন তার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে শাড়িসহ তাকে ছেড়ে দিয়েছে।

টাকা কীভাবে দিলেন- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিকাশের মাধ্যমে তাদের কাছে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করে তার পরিবার। পরে টাকা পেয়ে তারা তাকে ছেড়ে দেয়।

শিবালয় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বুধবার বিকেলে এ প্রসঙ্গে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘এটি হাইওয়ে পুলিশের বিষয়। আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। আপনি হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’

হাইওয়ে পুলিশের নাম্বার জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তাদের নাম্বার রাখি না।

মানিকগঞ্জ গোলড়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ন কবির এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বরঙ্গাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি আমার অধীনে। তবে আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আপনাকে পরে ফোন দিচ্ছি।’

কিছুক্ষণ পর তিনি জানান, ‘সংশ্লিষ্ট ফাঁড়ির ইনচার্জ সার্জেন্ট নাজমুল আমাকে জানিয়েছে, ফারুক, মানিক, কিবরিয়া ও হারুন নামে ওই ফাঁড়িতে তাদের কোনও সদস্য নেই।’

বিষয়টি নিয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় যোগাযোগ করা হলে থানার ওসি রেজাউল হক দ্য রিপোর্টকে বলেন, এমন কোনো ঘটনা তার জানা নেই।

ফারুক, মানিক, কিবরিয়া ও হারুন নামে কোনো সদস্য তার থানায় নেই বলেও জানান তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/এএইচএ-কেজেএন/এমএআর/এজেড/ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর