thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২২ জমাদিউল আউয়াল 1446

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের নিষেধাজ্ঞা

নদীতে নষ্ট হচ্ছে কয়েক কোটি টাকার বাঁশ

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ০৭ ১১:৪২:১৮
নদীতে নষ্ট হচ্ছে কয়েক কোটি টাকার বাঁশ

খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা : জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় জীবিকা নিয়ে সঙ্কটে পড়েছে খাগড়াছড়ির বাঁশ সংগ্রহ ও বিক্রির ওপর নির্ভরশীল লক্ষাধিক শ্রমজীবী মানুষ। কর্ণফুলী পেপার মিল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে জেলা প্রশাসক বাঁশ সংগ্রহ ও বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে একটি পরিপত্র জারি করেছে। ফলে ব্যবসায়ীদের সংগ্রহ করা কয়েক কোটি টাকার বাঁশ এখন নদীতেই পচছে। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, এই নিষেধাজ্ঞার সীমা আরো দীর্ঘায়িত হলে পচনশীল এই কাঁচামাল নদীতেই রেখে দিতে হবে।

কেপিএম-এর কাঁচামাল হিসেবে বাঁশ ব্যবহার করা হলেও সরকার নির্ধারিত দরের সাথে পোষাতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে বাধ্য হয়েই তারা সমতলে বাঁশ নিয়ে যান। অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত কাগজ কলের (কেপিএম) কাঁচামাল (বাঁশ) উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার অজুহাতে কারখানা কর্তৃপক্ষের অনুরোধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক।

বনজসম্পদের ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল খাগড়াছড়ি জেলার অধিকাংশ মানুষ। এ জেলার লক্ষাধিক মানুষ বছরের ৯ মাসই গহিন পাহাড় থেকে বাঁশ কাটা, কাঁধে বহন এবং নদীপথে পরিবহনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। এছাড়া বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয়ের বাঁশ ব্যবসা জেলার গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সেক্টরও। জেলা প্রশাসকের নিষেধাজ্ঞায় বাঁশ পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক স্থবিরতা নেমে এসেছে পুরো জেলায়। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, শ্রমিক এবং পরিবহন সেক্টরে দানা বেঁধেছে হতাশা ও ক্ষোভ।

বাঁশ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান জানান, স্থানীয়ভাবে প্রতি পিস বাঁশ ক্রয়ে প্রায় ৫০ টাকা পড়ে। সে হিসাবে কেপিএম পর্যন্ত পৌঁছতে গাড়িপ্রতি খরচ পড়ে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা। আর কেপিএম কর্তৃপক্ষ দিতে চাচ্ছে মাত্র ৩৯ হাজার টাকা। এতে করে আমাদের প্রতি গাড়িতে প্রায় ৩৬ হাজার টাকার লোকসান দিতে হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের রেঞ্জার মো. মাসুদ সরদার জানান, নাড়াইছড়ি রেঞ্জের বাঁশ কেপিএম-এর আওতাভুক্ত নয়। কেপিএম কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে বন বিভাগকে কোনো চিঠি দেননি। কিন্তু খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন গত ১৬ জানুয়ারি ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

তিনি জানান, জেলা প্রশাসনের আকস্মিক নিষেধাজ্ঞার কারণে মাইনী নদীতে রাজস্ব পরিশোধিত প্রায় তিন লাখ বাঁশ নষ্ট হচ্ছে।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো মাসুদ করিম জানান, কেপিএম কর্তৃপক্ষের অনুরোধে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে কেপিএম-এ বাঁশ সরবরাহের জন্য পরিপত্র জারি করা হয়েছে।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল সরবরাহের কথা বলে লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জীবিকা থমকে গেলেও বাঁশ পরিবহনের ক্ষেত্রে ন্যায্যমূল্য দিতে ইচ্ছুক নয় প্রতিষ্ঠানটি।

একদিকে নিষেধাজ্ঞা আর অন্যদিকে নদীতে কোটি টাকার বাঁশ পড়ে থাকায় চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন সব ব্যবসায়ী। অবিলম্বে বাঁশ পরিবহনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হলে ব্যবসায়ীরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলে জানিয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এইচএমপি/এমডি/এজেড/ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর