thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১,  ১০ জিলহজ ১৪৪৫

পোশাক খাতে ন্যূনতম মজুরি ৫৩০০ টাকা করার প্রস্তাব

২০১৩ নভেম্বর ০৫ ০৯:০৪:৩৩
পোশাক খাতে ন্যূনতম মজুরি ৫৩০০ টাকা করার প্রস্তাব

দিরিপোর্ট২৪ ডেস্ক : গার্মেন্ট খাতে শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি পাঁচ হাজার তিনশ’ টাকা করার প্রস্তাব করেছে সরকারের গঠিত ন্যূনতম মজুরি বোর্ড।

সোমবার ঢাকায় মজুরি বোর্ডের নবম সভায় মালিকপক্ষের সম্মতি ছাড়াই ভোটাভুটির মাধ্যমে এই প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়।

মজুরি বোর্ডে শ্রমিক প্রতিনিধি এটিকে মেনে নিলেও মালিকপক্ষ বলছে ন্যূনতম মজুরি তিন হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ হাজার তিনশ’ টাকার প্রস্তাব বাস্তবসম্মত নয়।

তবে মজুরি বোর্ডের এই প্রস্তাবনার পরও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে শ্রমমন্ত্রণালয়ের দিক থেকে।

বোর্ডের নিরপেক্ষ সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো. কামালউদ্দিন জানিয়েছেন মজুরি বোর্ডের চূড়ান্ত প্রস্তাবনায় মালিকপক্ষ স্বাক্ষর করেনি।

মজুরি বোর্ডের গত সভায় ন্যূনতম মজুরি পাঁচ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছিলেন ড. কামালউদ্দিন। পরে মজুরি বোর্ডের সভায় দরকষাকষির একপর্যায়ে শ্রমিকপক্ষ পাঁচহাজার টাকার সঙ্গে আরও তিনশ’ টাকা খাদ্যভাতা যোগ করার প্রস্তাব করে শ্রমিকপক্ষ।

অন্যদিকে মালিকপক্ষ সর্বোচ্চ চার হাজার পাঁচশ’ টাকার বেশি দিতে রাজি হয়নি। উভয় প্রস্তাব তখন ভোটে দেয়া হয় বলে জানান ড. কামালউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বোর্ডে চেয়ারম্যানসহ ছয়জন সদস্য ছিলেন। সেখানে মালিকদের দুই জন এবং শ্রমিকপক্ষের দুইজন প্রতিনিধি ছিলেন। আমি শ্রমিকদের পক্ষে ভোট দেয়ায় পাঁচ হাজার তিনশ’ টাকার প্রস্তাবটি পাশ হয়ে যায়।’

কামালউদ্দিন বলেন, উভয়পক্ষকে একজায়গায় আনার জন্য তিনি চেষ্টা করেছেন কিন্তু সেটি সম্ভব না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আইন অনুযায়ী ভোটাভুটিতে যেতে হয়েছে।

কিন্তু ন্যূনতম মজুরি পাঁচ হাজার তিনশ’ টাকা করার প্রস্তাবকে ‘অগ্রহণযোগ্য' এবং ‘বাস্তবসম্মত নয়‘ বলে দাবি করেছেন মালিকপক্ষ।

তারা বলেন, গার্মেন্টস শিল্পের সামর্থ্য এবং ভবিষ্যত চিন্তা না করেই রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রাধান্য দিয়ে এই প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে।

মজুরি বোর্ডে মালিকপক্ষের একজন প্রতিনিধি আরশাদ জামাল দিপু বলেন, ‘অতি উৎসাহে ও রাজনৈতিক কোনো চাপে পড়ে আমাদের পোশাক শিল্পের ভবিষ্যত এবং সামর্থ্যের কথা চিন্তা না করেই তড়িঘড়ি করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, আগে যেখানে ন্যূনতম মজুরি তিন হাজার টাকা ছিল সেখানে ১১৫ শতাংশ বাড়িয়ে এখন পাঁচ হাজার তিনশ’ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এটি বাস্তবায়িত হলে পোশাক শিল্পের ভবিষ্যত ‘অনিশ্চিত‘ হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেন দিপু।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে বর্তমানে ৭০ শতাংশ ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প। পাঁচ হাজার তিনশ’ টাকা ন্যূনতম মজুরি হলে এসব কারখানা ঝুঁকিতে পড়বে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তবে শ্রমিকপক্ষ পাঁচ হাজার তিনশ’ টাকার প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। যদিও শুরু থেকেই শ্রমিকপক্ষ নূন্যতম মজুরি আট হাজার টাকা করার দাবিতে অনড় ছিল। কিন্ত শেষ পর্যন্ত সে দাবি থেকে সড়ে এসেছেন শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি।

মজুরি বোর্ডে শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনির কথাতেও ইঙ্গিত মিলেছে যে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারা শেষ পর্যন্ত পাঁচ হাজার তিনশ’ টাকা মেনে নিয়েছেন।

বাংলাদেশে গার্মেন্টস খাতে শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার রয়েছে বহু সংগঠন। রনি আশা করছেন শ্রমিকদের দিক থেকে সবাই এ প্রস্তাব মেনে নেবে।

বোর্ডের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মজুরি বোর্ডের এই প্রস্তাব এখন শ্রম মন্ত্রণালয়ে যাবে। মন্ত্রণালয় একটি খসড়া প্রকাশ করার পর ১৫ দিন সময় দেয়া হবে আপত্তি গ্রহণের জন্য।

মন্ত্রণালয় মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা করার চেষ্টা করবে।

যদি সেটি সম্ভব না হয় তাহলে শ্রম মন্ত্রণালয় যেটি চূড়ান্ত করবে, আইন অনুযায়ী সেটি সাবাই মানতে বাধ্য থাকবে।

এদিকে মালিকপক্ষ বলছে পাঁচ হাজার তিনশ’ টাকার প্রস্তাব সরকার শিল্পের স্বার্থে পুর্নর্বিবেচনা করবে বলে তারা আশা করছেন।

(দিরিপোর্ট২৪/কেএন/জেএম/নভেম্বর ০৫, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর