thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৮ জমাদিউল আউয়াল 1446

‘পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার জন্য মন্ত্রী-এমপিদের হুঙ্কার’

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ১৪ ১৭:০৭:৩৫
‘পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার জন্য মন্ত্রী-এমপিদের হুঙ্কার’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার জন্য বর্তমান সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা হুঙ্কার ছাড়ছেন মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভোটারবিহীন নির্বাচন করে অতীতে কেউ পাঁচ বছর কেন, পাঁচ মাসও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।

তিনি বলেন, মন্ত্রী-এমপিরা হুঙ্কার ছাড়ছেন কারণ তারা জানেন তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। এই জন্যই তারা বলেন, পাঁচ বছরের আগে ক্ষমতা ছাড়বেন না।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে শুক্রবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। ‘ভাষা আন্দোলন ও মওলানা ভাসানী’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ভাসানী স্মৃতি সংসদ।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে গোটা বিশ্বে এই নির্বাচনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। গোটা বিশ্ব বলছে, এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়। এ জন্য তারা খুব দ্রুত নির্বাচন করার কথা বলছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও অতি দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার কথা বলেছেন।’

তিনি বলেন, এই সরকার ভোটারবিহীন নির্বাচন করে আত্মতৃপ্তির কথা বলছে। তারা ফুলের আসরে বসে ক্রেস্ট নিচ্ছেন। কেউ কেউ বলছেন, ক্রেস্ট দরকার নেই টাকা দিয়ে যাও।

বর্তমান সংসদকে সার্কাসের জোকারের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, ‘ছলচাতুরি করে এই সংসদ হয়েছে। সার্কাসের জোকার-ক্লাউন যেমন আনন্দ দেয় বর্তমান সংসদ অনেকটা সে রকম তৈরি হয়েছে। এ এক মহাযন্ত্রণার ব্যাপার, কোনটা যে ঠিক তা বোঝা দায়। জাতি এ সার্কাস থেকে মুক্তি চায়।’

তিনি বলেন, সে জন্য জাতি চায়, এখন অতি দ্রুত সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। গায়ের জোরে জবরদস্তি করে বন্দুকের জোরে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, আপনারাও পারবেন না।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এতটাই দেউলিয়া হয়ে পড়েছে যে তাদের ক্রসফায়ার, গুলি করে মানুষ হত্যা করতে হচ্ছে। ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে হয়েছে।’

‘আওয়ামী লীগ তাদের নিজেদের ছাড়া আর কাউকে স্বীকৃতি দিতে চায় না’

আওয়ামী লীগ তাদের নিজেদের ছাড়া আর কাউকে স্বীকৃতি দিতে চায় না- এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিষ্ঠাতা মওলানা ভাসানীর কথা একবারের জন্যও আওয়ামী লীগ স্মরণ করে না। তারা মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর নাম স্মরণ করে না। সোহরাওয়ার্দীর নাম কখনও কখনও শোনা যায়।

মওলানা ভাসানীর প্রতি স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ভাসানী পাকিস্তানী উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। শতবর্ষ ধরে ত্যাগ ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দরিদ্র ও শোষণ থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সংগ্রাম করেছেন বাংলাদেশের অধিকার রক্ষার জন্য জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত লড়াই করেছেন।

আজকের প্রেক্ষাপটে মওলানা ভাসানীর কথা বার বার মনে পড়ে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মওলানা ভাসানী নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি ইতিহাস। তার মত নেতা এই জনপদে আর জন্ম নেননি।

তিনি বলেন, ‘৭২-৭৫ এর মত দৃশ্য এখনও পরিলক্ষিত হচ্ছে। মানুষকে মেরে ফেলা হচ্ছে। গণতন্ত্রের কথা বলে গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করা হচ্ছে। ’৭৫ এর মত এখনও সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে।

জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে ১৯৫২, ৭১, ৯০-এর সংগ্রামের দীক্ষা নিয়ে গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে নেমে আসতে হবে।

মওলানা ভাসানীর জীবনী নিয়ে একটি বই প্রকাশের জন্য কমিটি গঠনের আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।

আলোচনা সভায় ভাসানীর দৌহিত্র মাহমুদুল হক সানু অভিযোগ করে বলেন, ‘ইতিহাস থেকে মাওলানা ভাসানীর নাম মুছে ফেলার জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এ জন্য ৫ম ও ৭ম শ্রেণীর বই থেকে মাওলানা ভাসানীর নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আগামী প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানতে দেওয়ার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল হক মিলু সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ, সংগঠনের সাবেক সভাপতি নূর মোহাম্মদ খান, অ্যাডভোকেট নাজমুল হক নান্নু, সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুল হুদা প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/জেএম/সা/ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর