thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১১ জানুয়ারি 25, ২৮ পৌষ ১৪৩১,  ১১ রজব 1446

প্রার্থী নির্বাচনে ভুল করলে বগুড়ায় বিএনপির ভরাডুবির আশঙ্কা

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ১৫ ১৬:২৫:৩০
প্রার্থী নির্বাচনে ভুল করলে বগুড়ায় বিএনপির ভরাডুবির আশঙ্কা

আলমগীর হোসেন, বগুড়া : জেলার গাবতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ১৫ মার্চ। চতুর্থ দফার এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য গণসংযোগ ও প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

নির্বাচনে এখনও পর্যন্ত কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেয়নি বিএনপি। তবে বিএনপির একাধিক প্রার্থী রয়েছে এবারের নির্বাচনে অন্যদিকে আওয়ামী লীগের রয়েছে একটি করে প্রার্থী।

বগুড়ার অন্যান্য উপজেলার ন্যায় গাবতলী উপজেলায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া। দিন-রাত গণসংযোগ চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তবে বিএনপির দুর্গ বলে খ্যাত গাবতলী উপজেলা নির্বাচনের পরিস্থিতি এবার ভিন্ন। বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জামায়াত প্রার্থীরা নড়েচড়ে বসেছেন।

জেলার অন্য সব উপজেলার চেয়ে এ উপজেলা বিএনপির রাজনৈতিক ঘাঁটি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই জাতীয় নির্বাচননেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ হেভিওয়েট প্রার্থীরা অংশগ্রহণ করে আসছিলেন। ব্যতিক্রম হয়েছে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির আলতাফ হোসেন বিজয়ী হন।

নির্বাচনে এখনও পর্যন্ত বিএনপি বা ১৯-দলীয় জোট থেকে কাউকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন না দেওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে সমর্থনে কোনো ভুল হলেই ভরাডুবির আশঙ্কা রয়েছে।

আর এ সুযোগ হাতিয়ে নিতে পারে সরকারদলীয় প্রার্থীরা। সরকার দলীদের এক বনে এক বাঘ থাকায় তাদের প্রার্থী সমর্থনে বিভেদ নেই। অন্যদিকে ১৯-দলীয় জোটের একাধিক প্রার্থী থাকায় দলীয় সমর্থনে প্রার্থীর যোগ্যতা, সততা, নিষ্ঠাকে মূল্যায়ন করার আহ্বান দলীয় নেতাকর্মীদের।

গাবতলী উপজেলার বাগবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন শহীদ জিয়াউর রহমান। জিয়ার জন্মস্থান হওয়ায় এ উপজেলা বিএনপির ঘাঁটি বলে পরিচিত। ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিজে প্রার্থী হয়ে এখানে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। পরবর্তী এ আসন থেকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বিজয়ী হন। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় কোনো প্রার্থী ছিল না এ আসন থেকে।

উপজেলা পরিষদের চতুর্থ দফার (১৫ মার্চ) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ইতোমধ্যে প্রচার চালাচ্ছেন- আওয়ামী লীগের উপজেলা সভাপতি এএইচ আজম খান, ভাইস চেয়ারম্যান সাব্বির হাসান জাফরু পাইকার এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেকসোনা জালাল। অন্যদিকে বিএনপি তথা ১৯ দলের এখন পর্যন্ত কোন প্রার্থীকে সমর্থন না দিলেও থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক নতুনের নেতৃত্বে উপজেলায় চলছে প্রচারণা। আর বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিকভাবে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একাধিক মামলায় গ্রেফতারকৃতদের জামিন এবং মামলা দেখাশোনার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম হেলাল। তবে সমর্থক ও দলীয় নেতাকর্মীরা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন হেলালের পক্ষে। জামায়াতের চেয়ারম্যান প্রার্থী স্থানীয় আমীর মাকছুদুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জামায়াত সেক্রেটারি আব্দুল মজিদ উপজেলায় বিভিন্নস্থানে গণসংযোগ করছেন। জাপার লিয়াকত আলীও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

উপজেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে গ্রুপিং থাকলেও এবারের নির্বাচন উপলক্ষে তারা এক কাতারে এসেছেন। বিএনপিতে গ্রুপিং কিছুটা বেশি, কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়েছে বিএনপি। সে কারণে উপজেলা নির্বাচনে সরকার দলীয় ‘এক বনে এক বাঘের’ বিজয় হওয়ার সম্ভাবনা জোরালো রয়েছে।

এদিকে জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বিএনপি সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ করেছে জামায়াত। এ সব নিয়ে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৯ দলের মধ্যে দ্বিধা দেখা দিয়েছে।

বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা এ উপজেলায় দল থেকে সৎ, যোগ্য, ক্লিন ইমেজের অধিকারী কাউকে সমর্থন দেওয়া হোক। ভোটাররা মনে করেন, যে ব্যক্তি দক্ষতা, সৎ এবং জনগণের কল্যাণ করতে পারবেন এমন প্রার্থীকে ভোট দেবেন তারা।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম ভোলন বলেন, ‘আমাদের দলীয় সমর্থনে প্রত্যেক পদে একক প্রার্থী মাঠে। এ সব প্রার্থীকে বিজয়ী করতে দলীয়ভাবে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’

পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মোস্তাফিজ বলেন, ‘বিএনপি একটি বড় দল, সে কারণে সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থী থাকতে পারে। তবে দলীয়ভাবে সৎ, যোগ্য, জনপ্রিয়তা দেখে এমন কাউকে সমর্থন দিলে তার হয়ে আমরা কাজ করব।’

(দ্য রিপোর্ট/একে/জেএম/আরকে/ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর