thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ৬ জুলাই 25, ২২ আষাঢ় ১৪৩২,  ১০ মহররম 1447

মানবপাচারের নিরাপদ রুট এখন আকাশপথ!

২০১৬ অক্টোবর ১৩ ২১:০৬:০৫
মানবপাচারের নিরাপদ রুট এখন আকাশপথ!

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : দেশের সমুদ্রপথে মানবপাচার রোধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির কারণে বর্তমানে আকাশপথকে নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে পাচারকারী সিন্ডিকেট। চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে লিবিয়া পাচারকালে ৩৯ জনকে উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রামের পতেঙ্গাস্থ র‌্যাব-৭ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন জানান, মানবপাচারের জন্য এবার বিমানবন্দরকেই নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে পাচারকারী সিন্ডিকেট। তাদের নাম-ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো জানান, জাল ভিসা দিয়ে বিমানবন্দরের মাধ্যমে নিরাপদে এসব লোককে লিবিয়া ও ইতালি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যাচ্ছে পাচারকারীরা। ভিসার মেয়াদ না থাকলেও কীভাবে এসব যুবক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন চেক পোস্ট অতিক্রম করে বাংলাদেশ ত্যাগ করছে তা ভাবিয়ে তুলেছে র‌্যাবসহ সংশ্লিষ্টদের।

বুধবার (১২ অক্টোবর) রাতভর অভিযান পরিচালনা করে এসব বিদেশগামীকে আটক করা হয় বলে জানান র‌্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) চন্দন দেবনাথ। তাদের র‌্যাব-৭ এর পতেঙ্গা কার্যালয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আটককৃতদের মধ্যে ১৯ জনকে বিমানবন্দরের ভেতরে এবং ২০ জনকে বাইরে অপেক্ষমাণ অবস্থায় আটক করা হয়। তাদের অধিকাংশই যুবক।

লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন জানান, আরো ২১ জন সকালের একটি ফ্লাইটে লিবিয়ার উদ্দেশে দুবাই চলে গেছে। মোট ৭০ জনের একই পথে যাওয়ার কথা ছিল। বিমান ছেড়ে দেওয়ায় ওই ২১ জনকে আটকানো সম্ভব হয়নি।

আর্ন্তজাতিক মানবপাচারকারী দালাল সিন্ডিকেটের সদস্য সাদিক এবং মোজাম্মেলের মাধ্যমে এসব লোক লিবিয়া ও ইতালি পাচার হচ্ছিল বলে জানান তিনি।

আটক হওয়া ঢাকার বাসিন্দা মেহেদি হাসান জানান, এই সিন্ডিকেটের সাথে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকায় লিবিয়া ও ইতালি পৌঁছে দেওয়ার চুক্তি হয় তাদের। লিবিয়া পৌঁছলে টাকা পরিশোধ করার কথা। কীভাবে এ সিন্ডিকেটকে বিশ্বাস করলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে মেহেদি বলেন, আগে আরো লোক পাঠিয়েছে তারা।

আটক শরীয়তপুরের শামীম জানান, ইতালি যাওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন তিনি। বাকি টাকা ইতালি পৌঁছার পর দেওয়ার কথা। তাদেরকে এক দিনের নোটিশে নিজ নিজ গ্রাম থেকে প্রথমে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। তারপর সবাইকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন হোটেলে রাখা হয়।

এদিকে বাংলাদেশ থেকে লিবিয়া পর্যন্ত ৩০ জনের একটি পাচারকারী সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে র‌্যাব। আটক ৩৯ জনের কাছ থেকে বেশ কিছু পাসপোর্ট এবং জাল ভিসা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ভিসার বেশির ভাগই মেয়াদোত্তীর্ণ।

এ ঘটনার সাথে সিলেটের আল মামুন ট্রাভেলস এবং শামিম ট্যুরস নামে দুটি ট্রাভেল এজেন্সি জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে র‌্যাব। তবে বিমানবন্দরের কোনো কর্মকর্তা জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

র‌্যাব কমকর্তা মিফতাহ উদ্দিন জানান, চট্টগ্রাম থেকে প্রথমে দুবাই, এরপর তুরস্কের আঙ্কারা এয়ারপোর্ট হয়ে লিবিয়ার ত্রিপোলিতে পৌঁছে দেওয়া হয় পাচারকৃতদের।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/জেডটি/এম/অক্টোবর ১৩, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর