thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১১ জানুয়ারি 25, ২৮ পৌষ ১৪৩১,  ১১ রজব 1446

আলুর কারখানার বর্জ্য খালের পানিতে

আদমদীঘির ১৫ গ্রামের পরিবেশ দূষণ

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ১৬ ০৮:২৪:১২
আদমদীঘির ১৫ গ্রামের পরিবেশ দূষণ

বগুড়া সংবাদদাতা : জেলার আদমদীঘির পাশের তিলকপুর এলাকায় আলুর স্টার্চ (পাউডার) উৎপাদনকারী ‘ফ্লামিংগো’ নামের একটি কারখানার বর্জ্য পাশের খালের পানিতে মিশে পরিবেশ দূষণ করছে। স্থানীয় ১৫টি গ্রামের অধিবাসীরা এ অভিযোগে করেন।

তারা বলেন, প্রায় ৮ বছর আগে দেশের একমাত্র আলুর স্টার্চ উৎপাদনকারী ‘ফ্লামিংগো’ প্রতিষ্ঠানটি তিলকপুরে কারখানা স্থাপন করে। প্রথম বছর কারখানাটি চালুর পর এর বর্জ্য খালের পানিতে মিশে পানি দূষিত করে। ওই পানি খেয়ে খালপাড়ের গ্রামের গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি মারা গেলে গ্রামবাসী কারখানা ঘেরাও করে।

পরে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ রেখে ভবিষ্যতে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরির পর কারখানা চালু করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু প্ল্যান্ট তৈরি না করে বছরের পর বছর কারখানার বর্জ্য খালে ফেলা অব্যাহত রয়েছে। ফলে এলাকায় পানি দূষণের পাশাপাশি প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন ওই এলাকায় গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তিলকপুরের কারখানা এলাকা থেকে শুরু করে আদমদীঘির রক্তদহ বিল পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকার খালের পানি আলুর বর্জ্যে দূষিত হয়ে পড়েছে। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এ কারণে গ্রামবাসীদের বাড়িতে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।

আদমদীঘির ছাতিয়ান গ্রাম ইউনিয়নের দুর্গাপুর, অন্তাহার, হারদাম, বাগবাড়ী, ঘোড়াদহ, সান্তাহার পৌরসভার খয়রাবাদ, বশিপুর, পৌঁওতা ও তিলকপুর ইউনিয়নের নগর কুসম্বী, মির্জাপুর ও নূরনগর এলাকার কয়েক হাজার মানুষ ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের শিকার হয়েছেন। খালের বিষাক্ত পানি পান করে ওই এলাকার হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশু মারা যাচ্ছে।

অন্তাহার গ্রামের সোহেল রানা দ্য রিপোর্টকে জানান, গত এক সপ্তাহে খালের পানি ব্যবহার করে তাদের গ্রামের মেহের আলীর ৮-১০টি হাঁস-মুরগি, কুরুন আলীসহ আরও কয়েকজনের বেগুন, মরিচের চারা ও আলুর গাছ মরে গেছে।

একই গ্রামের ইমতিয়াজ বলেন, সাধারণত খরা মৌসুমে নলকূপে পানি না ওঠায় গ্রামবাসী খালের পানি দিয়ে গোসলসহ কাপড়-চোপড়, থালা-বাসন ধোয়ার কাজ করে। পানি দূষিত হওয়ার কারণে গ্রামবাসীর মধ্যে অনেকে চর্মরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

তিনি বলেন, বিষাক্ত পানি আসা বন্ধ করা না গেলে বিল মাছশূন্য হয়ে পড়বে।

ছাতিয়ান গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোক্তাকিন তালুকদার এ প্রসঙ্গে বলেন, জরুরিভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কেউ অভিযোগ দেয়নি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফ্লামিংগো কারখানার প্রকল্প প্রকৌশলী মোস্তাকিন রহমান জানান, খালে কোনোপ্রকার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে না। তবে আলু পরিষ্কার করার পানি খালে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, পানি দূষণের বিষয়টি তিনি সরেজমিন দেখবেন।

পরিবেশ অধিদফতরের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক আলি রেজা মজিদ জানান, তার দফতরে অভিযোগ এসেছে। পরিবেশ দূষণ রোধে ওই কারখানা কর্তৃপক্ষকে ৭ দিনের সময় দিয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/এমএইচও/এমএআর/এজেড/ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর