thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ জুলাই 25, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২,  ৫ মহররম 1447

 

 

 

বয়স্কদের ডায়াবেটিস হলে কী করবেন ?

২০১৬ নভেম্বর ১৪ ১১:১০:৩১
বয়স্কদের ডায়াবেটিস হলে কী করবেন ?

বয়স্ক ডায়াবেটিক লোকদেরকে অডায়াবেটিক লোকদের চেয়ে অধিকহারে অকাল প্রয়াণ, শারীরিক অক্ষমতা এবং একই সাথে অন্যান্য শারীরিক অসুখ, যেমন হৃদরোগ ও রক্তনালির অসুখ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক ইত্যাদিতে বেশি হারে ভুগতে হয়।

বয়স্ক লোকেরা আবার বেশি সংখ্যায় বয়সজনিত রোগেও ভুগেন। বয়সী লোকদের বয়সজনিত গ্লুকোজ সহ্যসীমা হ্রাসপ্রাপ্তি তাদের ক্রমশ ডায়াবেটিসের দিকে ধাবিত করে। তাদের ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা।

আজকাল মানুষের কাঙ্ক্ষিত বয়সসীমা বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নত দেশে মোট জনসংসার ১১% এর বেশি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি। আর শিগগিরই তা বেড়ে মোট ডায়াবেটিস রোগীর ২০%-এ উন্নীত হচ্ছে। অনেক মানুষ মধ্য বয়সেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। এ সংখ্যাটি প্রতি দশকেই বেড়ে যেতে থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে রক্তে বয়স জনিত অতিরিক্তি গ্লুকোজ থাকতে পারে। আবার অনেককেই বেশি বয়সে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হতে দেখা যায়।

ফিনল্যান্ডের জনগণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের রোগী পাওয়া গেছে। সে দেশে ৫৬ থেকে ৭৯ বছরের মানুষের প্রায় ৪০% ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ডেনমার্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মাত্র ৬% বয়স্ক মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। অাফ্রো- আমেরিকানদের ১৭.২% জনগণ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত (৫৬-৭৯ বছর বয়সী)। বয়স্ক ডায়াবেটিস রোগীরা সাধারণত টাইপ ২ এর অন্তর্ভুক্ত। আর এদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার প্রক্রিয়াও অন্যদের মতই। তাদের ক্ষেত্রেই কম পরিমাণে ইনসুলিন নিঃসরণ একটি বড় কারণ। এছাড়া কম শারীরিক শ্রম, দেহে জমাকৃত অতিরিক্ত চর্বি, অন্যান্য অসুখ বিসুখ ইত্যাদি ডায়াবেটিস হতে সহায়তা করে।

বয়স্ক ডায়াবেটিস রোগীদের রোগের সাধারণ লক্ষণগুলো- যেমন, অতিরিক্ত পানি পিপাসা পাওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া ইত্যাদি অনুপস্থিত থাকতে পারে। তবে অনির্দিষ্ট ধরনের লক্ষণাদি- যেমন, দুর্বলতা, যৌনাঙ্গে চুলকানি, প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা, দ্রুত ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি থাকতে পারে, যা রক্তে বেশি মাত্রায় গ্লুকোজের উপস্থিতিই প্রমাণ করে।

তাদের অনেকের আবার কাঁধে ব্যথাও থাকে। বয়স্ক ডায়াবেটিস রোগীদের অনেককেই ডায়াবেটিসের জটিলতা (যেমন- চোখে ছানিপড়া, কিডনি ফেইলিওর, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি) নিয়ে প্রথমবার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে দেখা যায়। বয়স্ক ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসা ক্ষেত্রেও শারীরিক শ্রম, পরিমিত ও প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণ এবং এন্টিডায়াবেটিক ওষুধ প্রয়োজন হয়। তবে তাদের জন্য মধ্য বয়সীদের মত অতোটা কঠোরভাবে রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ আশা না করাই ভাল। তাদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস ও অন্যান্য সহযোগী রোগের উপসর্গ দূর করাই প্রধান উদ্দেশ্য। মুখে খাবার এন্টিডায়াবেটিক ওষুধগুলো তাদের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্দেশিত হতে পারে। স্থূলকায়দের জন্য মেটফরমিন ভাল, যাদের রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ সহজসাধ্য হয়ে ওঠে না।

আবার যাদের কিটোনুরিয়া দেখা দিয়েছে তাদের ইনসুলিন নিতে হবে। বয়সী ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, নেফ্রোপ্যাথি, নিউরোপ্যাথি ও পায়ের ঘায়ে অধিক হারে ভুগতে দেখা যায়। এসব ব্যাপারে বিশেষ যত্ন নিতে হবে।

ডা. শাহজাদা সেলিম
এমবিবিএস, এমডি (এন্ডোক্রাইনোলজি ও মেটাবলিজম), এমএসিই (ইউএসএ)
সহকারী অধ্যাপক
এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ
কমফোর্ট ডক্টরস চেম্বার
১৬৫-১৬৬, গ্রীন রোড, ঢাকা
ফোন : ৮১২৪৯৯০, ৮১২৯৬৬৭, ০১৭৩১৯৫৬০৩৩, ০১৫৫২৪৬৮৩৭৭, ০১৯১৯০০০০২২
Email: selimshahjada@gmail.com

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর